মঙ্গলবার

২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৮ পৌষ, ১৪৩২

সর্বশেষ
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে পুলিশের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার দাবি মেহেরপুরে ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে যুবক নিহত এক তারেক রহমানের আগমন ঘিরে বিমানবন্দর এলাকায় পোশাক কারখানা নিয়ে সতর্কতা বিজিএমইএর বাঁশখালীর ঐতিহ্যবাহী বৈলগাঁও চা বাগানে সাড়ে ৪ লাখ কেজি চা উৎপাদনের পরিকল্পনা ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২ আসনে ঐক্যের বার্তা, প্রার্থী হিসেবে মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীবকে সমর্থন বিএনপির সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ধামরাইয়ে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ছাত্রদলের আনন্দ শোভাযাত্রা তারেক রহমানের নিরাপত্তা: উদ্বেগ থাকলেও শঙ্কিত নয় বিএনপি

নওগাঁর জমে উঠেছে কাঁঠাল পাতার ব্যবসা

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১ মে, ২০২৫ ১৪:৩৮

শেয়ার

নওগাঁর জমে উঠেছে কাঁঠাল পাতার ব্যবসা
ঈদকে কেন্দ্র করে নওগাঁর বিভিন্ন গ্রামে জমে উঠেছে কাঁঠাল পাতার ব্যবসা।

এক সময় যার কোনো মূল্যই ছিল না, সেই কাঁঠাল পাতা এখন হয়ে উঠেছে গ্রামীণ অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে নওগাঁর বিভিন্ন গ্রামে জমে উঠেছে কাঁঠাল পাতার ব্যবসা। গরু-ছাগলের খাদ্য হিসেবে এই পাতার চাহিদা এখন তুঙ্গে। গ্রামাঞ্চলে এখন কাঁঠাল পাতার এমন চাহিদা যে, প্রতিটি বাজারেই দেখা যাচ্ছে পাতা বেচাকেনার ব্যস্ততা।

ঈদের মৌসুমে যেখানে মানুষ পশু কেনাবেচার দিকে বেশি নজর দেয়, সেখানে কাঁঠাল পাতা ও খড়ের মতো প্রাকৃতিক উপাদানগুলো হয়ে উঠেছে আয়ের বিকল্প উৎস। অনেকেই ছোট পরিসরে এই ব্যবসা করে এখন সংসারের হাল ধরেছেন।

কাঁঠাল পাতার ব্যবহার মূলত পশুখাদ্য হিসেবে হয়ে থাকে। কোরবানির পশুর পেছনে অতিরিক্ত যত্ন ও খাওয়ানোর প্রবণতার কারণে এসব পাতা চাহিদার শীর্ষে। বিশেষ করে ছাগল পালনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা বলছেন, কাঁঠাল পাতা গরু-ছাগলের খুবই প্রিয় খাবার, এবং এটি অন্যান্য পাতার তুলনায় বেশি পুষ্টিকর ও সহজলভ্য।

স্থানীয় ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, আমি প্রায় ৫ বছর ধরে ঈদের আগে কাঁঠাল পাতার ব্যবসা করে আসছি। আমরা গ্রামের আশেপাশে যারা কাঁঠাল গাছের মালিক তাদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে পাতা কাটি। এরপর সেগুলো বাজারে এনে বিক্রি করি। এতে করে আমাদের জীবিকা চলে, আর গাছের মালিকদেরও কিছু টাকা দিয়ে খুশি রাখি। সবাই উপকৃত হচ্ছেন।”

আরেক ব্যবসায়ী রেজাউল করিম জানান, “ঈদের কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই আমরা বিভিন্ন গ্রামে যাই। যাদের কাঁঠাল গাছ আছে, তাদের কাছ থেকে গাছের পাতা ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দিয়ে কিনে নিই। এরপর সেগুলো ছোট ছোট আটি বেঁধে পাইকারি বাজারে বিক্রি করি। এতে আমাদের আয় হয়, সংসার চলে, আবার গাছের মালিকরাও আয় করেন। বিশেষ করে ছাগলেরা এই পাতা খুব পছন্দ করে।”

গাছের মালিক ফারুক হোসেন বলেন, “আগে এসব পাতা গাছ থেকে ঝরে পড়ত, আমরা ওসব কুড়াতামও না। কিন্তু এখন ব্যবসায়ীরা এসে আগেভাগেই কিনে নিয়ে যায়। কিছুটা আয় হয়, গাছও পরিষ্কার থাকে।”

স্থানীয় আরেকজন বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, কাঁঠাল পাতার এমন চাহিদা আগে কখনো কল্পনাও করিনি। আমার বাড়িতে কয়েকটি গাছ আছে, সেখান থেকে বছরে দুইবার ভালো আয় হয়। বিশেষ করে ঈদের সময় এটি একটি বাড়তি আয়ের সুযোগ করে দেয়।”

নওগাঁ জেলার পশুর হাটগুলোতেও কাঁঠাল পাতার কেনাবেচা লক্ষণীয়। হাটে গরু বা ছাগল কিনতে আসা অনেকেই সাথেই নিয়ে যাচ্ছেন কয়েক আঁটি কাঁঠাল পাতা। একদিকে যেমন ব্যবসা বাড়ছে, অন্যদিকে খামারিরাও পাচ্ছেন সহজে পাওয়া পশুখাদ্য। কাঁঠাল পাতার এই আকস্মিক জনপ্রিয়তা ও ব্যবসায়িক চাহিদা গ্রামীণ মানুষের জীবনে এনে দিয়েছে নতুন আশার আলো। যে পাতাটি একসময় ছিল ফেলনা, আজ তা অনেকের জীবিকা ও অর্থনীতির চাকা ঘোরানোর অন্যতম হাতিয়ার।



আরও পড়ুন:

banner close
banner close