বৃহস্পতিবার

১৫ মে, ২০২৫
১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
১৮ জিলক্বদ, ১৪৪৬

অস্তিত্ব বিপন্নের পথে পর্যটন কক্সবাজার শহরের ঐতিহ্যবাহি তিন পুকুর

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫ মে, ২০২৫ ১৩:৫৯

শেয়ার

অস্তিত্ব বিপন্নের পথে পর্যটন কক্সবাজার শহরের ঐতিহ্যবাহি তিন পুকুর
ছবি: সংগৃহীত

অস্তিত্ব বিপন্নের পথে দাড়িয়েছে পর্যটন শহর কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহি তিন পুকুর৷ পুকুরগুলো হলো গোলদিঘি, লালদিঘি ও নাপিতের পুকুর। শুধু তাই নয়, এই পুকুরগুলো বর্তমানে পশুদের চারণভূমিতে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেখান থেকে চুরি হয়ে যাচ্ছে দামী আলোকসজ্জাসহ জিনিসপত্র। আর এসবের জন্য স্থানীয়রা দুষছেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে।

বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কোটি টাকা ব্যয়ে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য তৈরিকৃত পুকুর যেনো ছাগলের খামার। কক্সবাজারের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী নাপিতা পুকুরের অবস্থা এখন সেরকমই। পুকুরটি হয়ে পড়েছে ময়লার ভাগাড় ও ছাগল চারণভূমি। ঐতিহ্যবাহী এই পুকুরের চারপাশে চলাচলের রাস্তা গুলোতেও আবর্জনার স্তুপ জমছে।

নাপিতা পুকুরের মতো একই ভাগ্য লালদীঘি ও গোলদিঘীর। ঐতিহ্যবাহী এই পুকুরগুলো এখন পড়ে আছে চরম অবহেলা ও অব্যবস্থাপনায়। শুকিয়ে গেছে পানি। ছুটির দিনে গানের সাথে পানির কৃত্রিম ঝর্ণার প্রদর্শনীও বন্ধ গোলদিঘিতে। চুরি হয়ে গেছে মূল্যবান আলোকসজ্জা গুলোও।

এদিকে ৩ পুকুরের এমন বেহাল দশার জন্য স্থানীয়রা দুষছেন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে। স্থানীয় বাসিন্দা সাইদ স্বাধীন মনে করেন কোনো প্রকার তদারকি এবং রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় পুকুর গুলোর এমন অবস্থা।

গোলদিঘির পাড় এলাকার বাসিন্দা আসিফ বলেন, ‘পর্যটন নগরী কক্সবাজারের জন্য একটি অভিনব পর্যটন স্পট হতে পারতো এসব জলাধার। এগুলোকে তৈরি করাও হয়েছিল বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে। তবে মাত্র কয়েক বছরেই পুকুর গুলোতে রাতে ভুতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।’

রাতে পুকুরের ভুতুড়ে চিত্রর কথা উল্লেখ করে অন্য এক বাসিন্দা জাহেদুল হক বলেন, ‘পর্যাপ্ত পরিমাণ লাইট না থাকা এবং কিছু কিছু লাইট চুরি হয়ে যাওয়ার কারণে পর্যটক তো দূরের কথা স্থানীয়রাও এসব পুকুরপাড়ে বসতে ভয় পায়। আর পুকুরগুলোর আশেপাশে ময়লা আবর্জনা তো আছেই।’

পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানিয়ে সচেতন এই বাসিন্দারা জানান, সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে সঠিক ব্যবস্থাপনায় প্রাণ ফিরে পাক এসব সরকারি স্থাপনা।

কক্সবাজার শহরকে পরিকল্পিত পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার অংশ হিসেবে ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে লালদীঘি, গোলদীঘি ও নাপিতা পুকুরকে কেন্দ্র করে সৌন্দর্য বর্ধন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে কক্সবাজারে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। যা ২০২০ সালের মাঝামাঝিতে উদ্বোধন করা হয়। এরপর দুই বছর ঠিকঠাক তদারকি চললেও ২০২২ সালের আগস্টে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান অবসরপ্রাপ্ত কমোডর নুরুল আবছার। এরপর থেকে অদৃশ্য কারণে বন্ধ হয়ে যায় গোলদিঘির ওয়াটার লাইট শোসহ তিন পুকুরের বিশের তদারকি।

এদিকে গত ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের পর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এসব পুকুর কক্সবাজার পৌরসভাকে হস্তান্তর করে। তারপর পুকুর গুলোর তদারকি ব্যবস্থা আরো নাজেহাল হতে থাকে।

 

banner close
banner close