শনিবার

১০ মে, ২০২৫
২৬ বৈশাখ, ১৪৩২
১২ জিলক্বদ, ১৪৪৬

স্বামীসহ পরিবারের চার সদস্যকে হারানোর কয়েক ঘণ্টা পর পুত্র সন্তানের মা হলেন রোজিনা

মাদারীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৯ মে, ২০২৫ ১৫:২৫

শেয়ার

স্বামীসহ পরিবারের চার সদস্যকে হারানোর কয়েক ঘণ্টা পর পুত্র সন্তানের মা হলেন রোজিনা
একই পরিবারের ৪ জন নিহত। বাংলা এডিশন

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় মাদারীপুরের একই পরিবারের ৪ জন নিহত হলেও সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন হাফেজ বিল্লাল ফকিরের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রোজিনা বেগম। মুলত তাকেই অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে পরিবারের লোকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাতে মাদারীপুর সদর উপজেলার উত্তর দুধখালী ইউনিয়নের মিঠাপুর গ্রামে নিহতদের বাড়িতে গেলে এ তথ্য জানান স্বজন ও স্থানীয়রা। একই পরিবারের নিহত চারজন হলেন, সদর উপজেলার মিঠাপুর গ্রামের মাওলানা সামাদ ফকির, তার ছেলে হাফেজ বিল্লাল ফকির, স্ত্রী সাহেদা বেগম ও মেয়ে আফসানা আক্তার। এ ঘটনায় আহত অবস্থায় রোজিনা বেগমকে রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। স্বামীসহ পরিবারের চারজনকে হারানোর কয়েক ঘণ্টা পর সেখানে রাতে অপারেশনের মাধ্যমে রোজিনা একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, অ্যাম্বুলেন্সে করে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রোজিনা বেগমকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছিলেন হাফেজ বিল্লাল ফকির ও তার পরিবারের সদস্যরা। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নিমতলা তালুকদার পাম্পের সামনে এলে তাদেরকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটির সামনের চাকা ফেটে যায়। এসময় মেরামত করার জন্য রাস্তার পাশে গাড়িটি থামিয়ে রাখা হয়। চাকা পালটানোর সময় পেছন দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে আসা ঢাকাগামী গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস অ্যাম্বুলেন্সের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে একই পরিবারের ৪ জনসহ ৫ জন মারা যায়।

স্থানীয়রা জানায়, নিহত মাওলানা সামাদ ফকির ও তার ছেলে হাফেজ বিল্লাল ফকির দুজনেই ছিলেন দুটি মসজিদের ইমাম। নিহত বিল্লালের স্ত্রী রোজিনা অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তাকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছিলেন পরিবার। এসময়ই ঘটে দুর্ঘটনা।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য শারাফ উদ্দিন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে একই পরিবারের ৪ জন রয়েছে। দ্রুতগতির একটি বেপরোয়া বাস অ্যাম্বুলেন্সকে পেছন থেকে চাপা দেয়। এতেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা বাস চালকের শাস্তি চাই এবং সরকারের কাছে অনুরোধ নিহতদের পরিবারকে যেন অর্থিক সহযোগিতা করা হয়।

মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, একই পরিবারের ৪ জন নিহত হয়েছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। নিহতের পরিবার আবেদন করলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।

banner close
banner close