মঙ্গলবার

৬ মে, ২০২৫
২৩ বৈশাখ, ১৪৩২
৮ জিলক্বদ, ১৪৪৬

হরিরামপুরে ৬ বছরেও শেষ হয়নি সড়ক নির্মাণ কাজ

জ. ই. আকাশ,হরিরামপুর

প্রকাশিত: ৬ মে, ২০২৫ ১৩:৪৬

শেয়ার

হরিরামপুরে ৬ বছরেও শেষ হয়নি সড়ক নির্মাণ কাজ
কাণ্ঠাপাড়া বাজার হতে যাত্রাপুর হাই স্কুল পর্যন্ত নির্মাণাধিন রাস্তা।

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের বয়ড়া ইউনিয়নের কাণ্ঠাপাড়া বাজার হতে যাত্রাপুর হাই স্কুল পর্যন্ত রাস্তা পাকা করণের দেড় বছরের কাজ শেষ হয়নি ছয় বছরেও, এমন অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। ছয় বছরে রাস্তাটিতে খোয়া ফলে রোলার গাড়ি দিয়ে ডলনা দিলেও দেখেনি পিচ ঢালাইয়ের মুখ। এতে করে যানবাহন চলাচলে দিনে দিনে খোয়া গুড়ো হয়ে এখন পরিণত হয়েছে ধুলার রাজ্যে। ফলে যাতায়াতে ব্যাহত হচ্ছে হাজার হাজার মানুষের পথ চলা। চলাফেরা করতে পারছে না যাত্রাপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতশত কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপি- এর আওতায় ১২ শ ৩০ মিটারের এই রাস্তার কাজের টেন্ডার হয়। ২ কোটি ৩৪ লক্ষ ৩২ হাজার ২৩১ টাকা দরে কাজটি পায় M/S AMK-MSL JV নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এরপর ২০২২ সালের শেষের দিকে কাজ শুরু  করা হয়। ধাপে ধাপে কয়েক বছর ধরে কাজটি খোয়া ফেলানো পর্যন্ত হলেও আর আলোর মুখ দেখেনি। বারে বারে সময় বৃদ্ধি করা হলেও সর্বশেষ বর্ধিত সময়ের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর। এরপরেও আবার চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন করা হলেও মে মাসের মাঝামাঝিতেও এখনও শুরু হয়নি কাজ। ফলে চরম জনদুর্ভোগে এলাকাবাসী।

সোমবার বিকেলে সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন,  প্রায়  ৬ বছর ধরে রাস্তার কাজ চলছে এখনও শেষ হয়নি। মাঝে মাঝে একটু আধটু কাজ করে গেলেও আর খবর থাকে না। রাস্তায় যে খোয়াগুলো ফেলেছিল তাও এখন গুড়ো হয়ে গেছে। একটা মোটরসাইকেল গেলেই ধুলায় বাড়ি ঘরে থাকা যায় না বলে অভিযোগ করেন একাধিক এলাকাবাসী।

যাত্রাপুর গ্রামের বনমালী পাল জানান, এই রাস্তাটা একটা জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। প্রায় ছয় বছর ধরে রাস্তাটির কাজ চলছে। এখনও শেষ হলো না। একটা গাড়ি গেলে এমন ধুলা উড়ে বাড়ি ঘরেই থাকা যায়। চলতে ফিরতে অনেক সময় খোয়া হুচুট খেতে হয়। রাস্তার কাজ জরুরিভাবে শেষ করা প্রয়োজন। আমরা খুব ভোগান্তিতে আছি।
একই গ্রামের শান্ত পাল জানান, এই রাস্তাটা নিয়ে আমরা খুব বিপদে আছি। কি আর বলব। আজ প্রায় ছয় বছর ধরে রাস্তার কাজ চলছে এখনো শেষ হলো না। আমার চলতে ফিরতে খুব কষ্ট। এই রাস্তা দুটি বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা চলাফেরা করে। কাজ যা করেছে যানবাহন চলায় এখন শুধু ধুলা উড়ে। আমাদের বাড়ি তো রাস্তার পাশে ধুলায় বসবাস করাই কষ্টকর। আর খালি পায়ে তো দূরের কথা, সেন্ডেল পরেও রাস্তা চলা যায় না। তাই দ্রুত রাস্তার কাজ শেষ করার দাবি করছি।

যাত্রাপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মিন্টু কুমার রায় জানান, রাস্তাটা নিয়ে আমরা খুবই সমস্যায় আছি। আজ কয়েক বছর ধরে থেমে থেমে কাজ এতোটুকু কাজ করেছে। বাকি কাজটুকু করার আর হদিস নেই। মানুষের চলাচলে খুবই সমস্যা হচ্ছে। সামনে একটা জায়গার অনেকখানি রাস্তা ধসেও গেছে। এতে করে যানবাহন চলাচলেও সমস্যা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের কাছে একটাই চাওয়া যতদ্রুত সম্ভব রাস্তাটির বাকি কাজটুকু যেভাবে শেষ করা সম্ভব সে ব্যবস্থা করার জোর দাবি করছি।

বয়ড়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মিরাজ মিয়া জানান, আমাদের এই রাস্তাটি দীর্ঘদিন যাবৎ পরে আছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কোনো খবর নেই। আমি একাধিকবার উপজেলা এলজিইডি অফিসে জানালেও কোনো কাজ হচ্ছে না। রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলায় এখন শুধু ধুলো উড়ে। মানুষজন চলাফেরা করতে পারছে না। একটি ধসে যাওয়ায় এলাকার মানুষজন কৃষিপণ্য নিয়ে যাতায়াত করতে পারে না। মানুষের ভোগান্তি এখন চরমে পৌঁছে গেছে। তাই সামনে বর্ষা মৌসুমের আগে রাস্তার কাজ শেষ না হলে জনগণের ভোগান্তির শেষ থাকবে না। প্রায় ৭/৮টি গ্রামের মানুষসহ অনেক দূরদূরান্তের হাজার হাজার মানুষ এই রাস্তা চলাচল করে।

এ বিষয়ে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী এবিএম খোরশেদ আলম মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

 

 

banner close
banner close