রবিবার

৪ মে, ২০২৫
২১ বৈশাখ, ১৪৩২
৭ জিলক্বদ, ১৪৪৬

পাহাড়ী টিলায় কলা চাষে ঝুঁকছেন চাকমারা

প্রতিনিধি,কক্সবাজার

প্রকাশিত: ৪ মে, ২০২৫ ১৬:২৪

শেয়ার

পাহাড়ী টিলায় কলা চাষে ঝুঁকছেন চাকমারা
ছবি : বাংলা এডিশন

চাহিদা ও দাম পাওয়ায় কলা চাষে ঝুঁকছেন চাকমারা। টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া, টেকনাফ সদর, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের হরিখোলা, লম্বাঘোনা, লাতুরীখোলা, কেরুনতলী, ঘিলাতলী, চাকমারকূল, আমতলী, চাকমাপাড়ার ক্ষুদ্র নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠীসহ বহু স্থানীয় চাষিরা। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বসতি জনিত কারনে বহু এনজিওতে চাকরিজীবি থাকায় খনিজ জাতীয় খাবার হিসেবে  জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই দেশীয় কলা। দেখতে সুন্দর, খেতে মজা, সাইজে মোটা  হওয়ায় বাজারে কদর বেড়েছে  এই কলার। বহু কৃষক  বাড়ির পাশের পতিত জমি, পুকুরের পাড়, এমনকি ফসলি জমিতে চাষ করছেন এই দেশীয় কলা। বাজারে এর চাহিদা থাকায় ও আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় বাড়ছে কলা চাষ। ইতিমধ্যে অনেকে কলা চাষ করে হয়েছেন স্বাবলম্বী।

উক্ত এলাকার  কলাচাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্যান্য ফসলের চেয়ে কলা চাষ করে বেশি লাভবান হওয়া গেলেও প্রতি বছর বন্য হাতির তান্ডবে তা নিমিষে শেষ হয়ে যায়। কলাগাছের চারা রোপণের অল্পদিনের মধ্যেই বেড়ে ওঠে এবং দ্রæত ফল পাওয়া যায়। তা ছাড়া কলা চাষের মধ্যে সাথি ফসল হিসেবে অন্যান্য ফসলও আবাদ করা যায়।

উত্তর বঙ্গের কলা চাষী আব্দুল্লাহ। বসবাস করেন হোয়াইক্যং এলাকায়। তাঁর পানের দোকানের জন্য পাহাড়ি টিলায় স্থানীয় জাতের কলা চাষ করে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পেয়েছেন বলে দাবি করেন।
পাহাড়ের টিলায় কলার চাষ করা রাসিঅং চাকমা, মো. জাফর, অলি আহমদ, আব্দুর রহমান বলেন, প্রতি ৪০ শতক জমিতে কলা চাষের জন্য ৩৫০-৪০০ কলার চারা রোপণ করা যায়। কানি প্রতি জমিতে খরচ হয় প্রায় ২০-২১ হাজার টাকা। আর লাভ হয় প্রায় ৮০-৯০ হাজার টাকা। বছরে একবার কলা চারা রোপণ করা হলে তা তিন বছর ভালোভাবে ফলন দিতে পারে যা অন্য কোনো ফসলের ক্ষেত্রে সম্ভব না। আমরা প্রতিবছরই কলা চাষ করি। তাছাড়া অন্যান্য ফসলের তুলনায় কলা চাষে খরচ কম। আর কলার চারা রোপণের এক বছরের মধ্যেই ফুল আসে। কলার ভালো দাম থাকায় আমরা নতুন করে এ বছর পতিত জায়গাগুলো পরিস্কার করে কলার সারা রোপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই বিষয়ে আমরা উপ-সহকারী কৃষি অফিসারের সাথে পরামর্শ ও চাষ কৌশল সম্পর্কে প্রশিক্ষন নিয়েছি। তিনি আমাদেরকে বিভিন্ন প্রযুক্তি কারিগরি কৌশল বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। যদি ভালো দাম পাই তাহলে পরবর্তী সময়ে আবাদ বাড়াব। কলার ভালো দাম থাকলে প্রতি কাঁদি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যেও বিক্রয় হয়। তবে এই দামটা সাধারণত রমজান মাসে হয়ে থাকে। বর্তমানে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে প্রতি কাঁদি বিক্রি হচ্ছে।

হোয়াইক্যং বকের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার সরুয়ার কাদের বাংলা এডিশন কে জানান, হোয়াইক্যং এলাকার পাহাড়ী অঞ্চলে বসবাসকারী অনেক চাকমা এবং কিছু মুসলিম পাহাড়ী ঢিলা ও পতিত জমিতে স্থানীয় জাতের কলা চাষাবাদ করে আশাতীত লাভবান হয়েছেন। ব্যক্তি উদ্যোগে সৃজিত কলা বাগান সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া অব্যাহত রয়েছে।

banner close
banner close