
ছবি : বাংলা এডিশন
উখিয়ায় লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় বর্ষার প্রথম বৃষ্টিতেই ফসলি জমি ও দোকানপাটে ঢুকে পড়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য। ড্রেনেজ ব্যবস্থার চরম অব্যবস্থাপনায় ক্যাম্প থেকে ভেসে আসা এসব বর্জ্যে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
১৬ এবং ১৭ এপ্রিল দুই দফা বৃষ্টিতে রাজাপালং ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ চাষাবাদের জমি সয়লাব হয়ে যায় ক্যাম্পের আবর্জনায়। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয় বহু কৃষক। ফসলী জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সামান্য বৃষ্টিতে ক্যাম্পের নালা উপচে ফসলি জমিতে ঢুকে পড়ছে মানববর্জ্য। সে সঙ্গে আছে প্লাস্টিক, পলিথিন ও মেডিকেল বর্জ্য। এ কারণে হুমকিতে জমির ধান আর সবজি ক্ষেত। অনেক জমিতে বর্জ্য জমে পচে যাচ্ছে ধান। এভাবে প্রতি বছর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যে চরম লোকসানে পড়তে হচ্ছে এখানকার কৃষকদের।
উখিয়া উপজেলার কুতুপালং কৃষক মোহাম্মদ আলী বলেন, চলতি মৌসুমে মাছকারিয়া বিলে আমি ৫ একর জমিতে ধান চাষ করেছি। ধান পাকতে শুরু করেছে। এমন সময় অল্প বৃষ্টিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য ভেসে এসে ফসলগুলো তলিয়ে গেছে। কুতুপালং লম্বাশিয়া এলাকার কৃষক রাশেদ ও আহমদ উল্লাহ বলেন, প্রতিবছর বর্ষা ও ব্যুরো মৌসুমে ধান চাষ করে আমরা জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। রোহিঙ্গা আসার পর থেকে একবারও ভালো মতো ফসল ঘরে তুলতে পারিনি। একটু বৃষ্টি হলেই ক্যাম্পের বর্জ্য এসে ফসলগুলো নষ্ট হয়ে যায়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য আসা বন্ধসহ খাল খনন করা জরুরী।
লম্বাশিয়া এলাকার কৃষক মোহাম্মদ সালাম জানান, চলতি মৌসুমে ৫ একর জমিতে ধান চাষ করেছি। ফসলও ভালো হয়েছে। কিন্তু সামান্য বৃষ্টিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য ভেসে এসে শেষ করে দিয়েছে জমির পাকা ধান। আক্ষেপ অভিযোগ করেও কোন ধরনের ক্ষতিপূরণ বা সমাধান পাইনি। রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, আমাদের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বর্জ্য আসা বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া ড্রেন নির্মাণ ও খালগুলো সংস্কার করতে হবে। আর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণের আওতায় আনতে হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যে উখিয়া উপজেলায় ৫০০ একরের বেশি ফসলি জমি ও সবজি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রশাসনকে জানিয়েও সমস্যার সমাধানে কিংবা কৃষকদের ক্ষতিপূরণে কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ড্রেনেজ সিস্টেম সঠিকভাবে পরিচালিত না হওয়ায় প্রতি বছর কৃষকের জমি ডুবে যায়। এনজিওগুলো ময়লা পরিস্কার করেনা। এতে ভোগান্তি বাড়ছে।
স্থানীয় কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, বৃষ্টির পানিতে ক্যাম্প থেকে যেভাবে পলিথিন, প্লাস্টিক, টয়লেটের ময়লা আর বর্জ্য আসে তাতে জমিতে কিছুই করা যায়না। ধান তো গেলই, জমির উর্বরতা পর্যন্ত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পাঁচ কানি ধানি জমির মধ্যে দেড় কানির মতো আধাপাকা ধান নষ্ট হয়ে গেছে। দোকান মালিক জুলফিকার আলী ভূট্রো জানান, ক্যাম্প সংলগ্ন দোকানগুলোতে পানি ঢুকে লাখ লাখ টাকার মালামাল নষ্ট হয়েছে। গত বছরও লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম সিআইসি বরাবরে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। স্থানীয় উন্নয়ন পর্যবেক্ষক ও পরিবেশকর্মী মাসুম বিল্লাহ বলেন, এই সমস্যা কেবল কৃষিকাজ নয়, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনায় জড়িত সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া স্থানীয়দের দুর্ভোগ লাঘব সম্ভব নয়। রোহিঙ্গা সংকট শুধু মানবিক নয়, এটি এখন এক গভীর পরিবেশ ও অর্থনৈতিক সংকটের রূপ নিচ্ছে। স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বছরের পর বছর ধরে যে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন, তা মোকাবিলায় সময়োপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া এখন সময়ের দাবি। অন্যথায় স্থানীয় জনগণের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে।
উখিয়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উখিয়া অঞ্চলে প্রায় ১২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল। এর মধ্যে অন্তত ২৫ শতাংশ জমি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যে আক্রান্ত হয়েছে। রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মীর সাহেদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, প্রতি বছর বর্ষা এলেই স্থানীয়রা ক্ষতির মুখে পড়ে। এবার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিকল্পিত পদক্ষেপ নিতে উপজেলা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে এলাকাও পরিদর্শন করেছি।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী বাংলা এডিশন কে বলেন, এই বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। যেহেতু ক্যাম্প কেন্দ্রীক তাই আরআরআরসির সাথে বসে টেকসই উন্নয়ন এবং কৃষকের ক্ষতি না হয় এমন একটি প্রকল্প হাতে নিয়ে কাজ করা হবে। ইতিমধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে এলাকায় পরিদর্শন করেছি। এনজিওগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশপাশের খাল গুলো খনন ও সংস্কারের জন্য আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) একটি ফান্ডিং করেছে। শিগগিরই কাজ শুরু করা হবে।
উখিয়া উপজেলার কুতুপালং কৃষক মোহাম্মদ আলী বলেন, চলতি মৌসুমে মাছকারিয়া বিলে আমি ৫ একর জমিতে ধান চাষ করেছি। ধান পাকতে শুরু করেছে। এমন সময় অল্প বৃষ্টিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য ভেসে এসে ফসলগুলো তলিয়ে গেছে। কুতুপালং লম্বাশিয়া এলাকার কৃষক রাশেদ ও আহমদ উল্লাহ বলেন, প্রতিবছর বর্ষা ও ব্যুরো মৌসুমে ধান চাষ করে আমরা জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। রোহিঙ্গা আসার পর থেকে একবারও ভালো মতো ফসল ঘরে তুলতে পারিনি। একটু বৃষ্টি হলেই ক্যাম্পের বর্জ্য এসে ফসলগুলো নষ্ট হয়ে যায়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য আসা বন্ধসহ খাল খনন করা জরুরী।
লম্বাশিয়া এলাকার কৃষক মোহাম্মদ সালাম জানান, চলতি মৌসুমে ৫ একর জমিতে ধান চাষ করেছি। ফসলও ভালো হয়েছে। কিন্তু সামান্য বৃষ্টিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য ভেসে এসে শেষ করে দিয়েছে জমির পাকা ধান। আক্ষেপ অভিযোগ করেও কোন ধরনের ক্ষতিপূরণ বা সমাধান পাইনি। রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, আমাদের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বর্জ্য আসা বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া ড্রেন নির্মাণ ও খালগুলো সংস্কার করতে হবে। আর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণের আওতায় আনতে হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যে উখিয়া উপজেলায় ৫০০ একরের বেশি ফসলি জমি ও সবজি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রশাসনকে জানিয়েও সমস্যার সমাধানে কিংবা কৃষকদের ক্ষতিপূরণে কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ড্রেনেজ সিস্টেম সঠিকভাবে পরিচালিত না হওয়ায় প্রতি বছর কৃষকের জমি ডুবে যায়। এনজিওগুলো ময়লা পরিস্কার করেনা। এতে ভোগান্তি বাড়ছে।
স্থানীয় কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, বৃষ্টির পানিতে ক্যাম্প থেকে যেভাবে পলিথিন, প্লাস্টিক, টয়লেটের ময়লা আর বর্জ্য আসে তাতে জমিতে কিছুই করা যায়না। ধান তো গেলই, জমির উর্বরতা পর্যন্ত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পাঁচ কানি ধানি জমির মধ্যে দেড় কানির মতো আধাপাকা ধান নষ্ট হয়ে গেছে। দোকান মালিক জুলফিকার আলী ভূট্রো জানান, ক্যাম্প সংলগ্ন দোকানগুলোতে পানি ঢুকে লাখ লাখ টাকার মালামাল নষ্ট হয়েছে। গত বছরও লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম সিআইসি বরাবরে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। স্থানীয় উন্নয়ন পর্যবেক্ষক ও পরিবেশকর্মী মাসুম বিল্লাহ বলেন, এই সমস্যা কেবল কৃষিকাজ নয়, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনায় জড়িত সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া স্থানীয়দের দুর্ভোগ লাঘব সম্ভব নয়। রোহিঙ্গা সংকট শুধু মানবিক নয়, এটি এখন এক গভীর পরিবেশ ও অর্থনৈতিক সংকটের রূপ নিচ্ছে। স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বছরের পর বছর ধরে যে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন, তা মোকাবিলায় সময়োপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া এখন সময়ের দাবি। অন্যথায় স্থানীয় জনগণের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে।
উখিয়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উখিয়া অঞ্চলে প্রায় ১২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল। এর মধ্যে অন্তত ২৫ শতাংশ জমি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যে আক্রান্ত হয়েছে। রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মীর সাহেদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, প্রতি বছর বর্ষা এলেই স্থানীয়রা ক্ষতির মুখে পড়ে। এবার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিকল্পিত পদক্ষেপ নিতে উপজেলা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে এলাকাও পরিদর্শন করেছি।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী বাংলা এডিশন কে বলেন, এই বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। যেহেতু ক্যাম্প কেন্দ্রীক তাই আরআরআরসির সাথে বসে টেকসই উন্নয়ন এবং কৃষকের ক্ষতি না হয় এমন একটি প্রকল্প হাতে নিয়ে কাজ করা হবে। ইতিমধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে এলাকায় পরিদর্শন করেছি। এনজিওগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশপাশের খাল গুলো খনন ও সংস্কারের জন্য আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) একটি ফান্ডিং করেছে। শিগগিরই কাজ শুরু করা হবে।
আরও পড়ুন: