
শিবগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। এ যেন দুর্নীতির এক অভয়াশ্রম। পিয়ন থেকে শুরু করে অফিসের প্রধান কর্তা পর্যন্ত কেউ ঘুষ ছাড়া নড়াচড়াও করেন না। এমনই অভিযোগ উঠেছে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পরিমল কুমার ঘোষ ও সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ, প্রতি বছরের স্লিপ ফান্ড, জিপিএফ একাউন্ট, সার্ভিস বুক চালু করা, মাতৃত্বকালীন ছুটি জন্য দিতে হয় নগদ ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। এছাড়া আইসিটি ট্রেইনিং সহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণের জন্য সহকারী শিক্ষকদের থেকে নেয়া হয় জোরপূর্বক টাকা। শিক্ষকদের পক্ষ থেকে আরও জানা গেছে, বদলী জনিত কারণে প্রত্যেক শিক্ষককে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বাধ্যতামূলকভাবে দিতে হলেও প্রতিস্থাপন জনিত বদলীর জন্য গুনতে লক্ষাধিক নগদ টাকা। এসব টাকা অফিস সহকারী জামাল উদ্দিন ও পিয়ন হাবিবুরের হাত হয়ে চলে যায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পরিমল কুমার ঘোষ ও সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: রফিকুল ইসলামের পকেটে।
পূর্ব শ্যামপুর গীতিআরা রহিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: সাহেব আলীর এসিআর-এ অর্থ ছাড়া স্বাক্ষর করেন নি সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম। প্রধান শিক্ষককে বাপ তুলে গালি দিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। এমনকি টাকা না দেওয়ায় এসিআর ছুঁড়ে ফেলে দেন।
বিদ্যালয়টির অন্য শিক্ষক মো: জাকিরুল ওয়াহিদ বলেন, তিনি আইসিটি ট্রেইনিং, জিপিএফ ও সার্ভিস বুক ওপেনের নামেও টাকা গ্রহণ করেন রফিকুল ইসলাম।
অভিযোগের বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সবকিছু অস্বীকার করেন। এবং বলেন কেউ তাকে এসিআর স্বাক্ষরের জন্য জমা দেন নি। আর তিনি এসব কাজে জড়িত নন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পরিমল কুমার ঘোষ জানান, অর্থ লেনদেনের বিষয়টি তিনি জানেন না।
শিবগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের যাবতীয় অনিয়মের বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: জেছের আলীর সাথে যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ তিনি শুনেছেন। তবে লিখিত কোন অভিযোগ এখনো পাননি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
আরও পড়ুন: