বৃহস্পতিবার

১ মে, ২০২৫
১৮ বৈশাখ, ১৪৩২
৪ জিলক্বদ, ১৪৪৬

পাবনা থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ: যাত্রীদের দুর্ভোগ

পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১৪:৩৭

শেয়ার

পাবনা থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ: যাত্রীদের দুর্ভোগ
ছবি: বাংলা এডিশন

রেলওয়ে কর্মচারীদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় সোমবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন রেলওয়ে কর্মচারীরা। ফলে পাবনা থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।

বিধি মোতাবেক অর্জিত মাইলেজ যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক প্রদানের দাবিতে কর্মবিরতিতে পালন করছেন রেলওয়ে কর্মচারীরা।

দাবির বিষয়ে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদ । কিন্তু বেঁধে দেওয়া সময় পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো সুরাহা না হওয়ায় কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। এতে সারাদেশে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

মঙ্গলবার সকালে পাবনার ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, কিছু যাত্রী না জেনে এসেছিলেন স্টেশনে। ট্রেন বন্ধ থাকায় তারা ফিরে যান। তারপর থেকেই স্টেশনটিতে শুনসান নীরবতা বিরাজ করছে।

রেলওয়ের রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক রবিউল ইসলাম জানান, ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস হলেও রানিং স্টাফদের গড়ে ১৫-১৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। এ জন্য তাদের দেয়া হয় বিশেষ আর্থিক সুবিধা, যাকে রেলওয়ের ভাষায় বলা হয় মাইলেজ। মাইলেজ রানিং স্টাফদের বেতনেরই অংশ। মাইলেজের হিসাব হলো, প্রতি ১০০ কিলোমিটার ট্রেন চালালে রানিং স্টাফরা মূল বেতনের এক বেসিকের সমপরিমাণ টাকা বেশি পাবেন। ৮ ঘণ্টায় একদিনের কর্মদিন ধরলে রানিং স্টাফদের প্রতি মাসে কাজ দাড়ায় আড়াই বা দুই-তিন মাসের সমপরিমাণ। তাদের বেতনও সেভাবেই দেয়া হয়।

তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া মূল বেতনের হিসাবে অবসরকালীন ভাতা যা হয় তার সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ৭৫ শতাংশ টাকা বেশি দিয়ে তাদের পেনশন দেয়া হয়। কিন্তু ২০২২ সালের জানুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় রানিং স্টাফদের সেই সুবিধা বাতিল করে। এর পর থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফ ঐক্য আন্দোলন করে আসছে।’

রেলওয়ে গার্ডস কাউন্সিল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন বলেন, ‘২৭ জানুয়ারির মধ্যে মাইলেজ প্রদানসহ সব দাবি পূরণে রেলওয়ে রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে রেলওয়ে কর্মকর্তা ও রেল মন্ত্রণালয়কে চিঠির মাধ্যমে বারবার অবহিত করা হয়েছে। আমাদের এ আন্দোলন তিন বছর ধরে চলছে। অথচ এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ। ফলে বাধ্য হয়ে আমাদের এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। আমাদের দাবি যখন মেনে নেবে তখন থেকেই আমরা কাজ শুরু করবো।’  

এদিকে স্টেশনে পুলিশী নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা স্টেশনের বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছেন।

ঈশ্বরদী জংশন রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার শাজাহান আলী বলেন, ‘আমরা স্টেশনে মাইকে যাত্রীদের উদ্দেশ্যে আহবান জানাচ্ছি, যারা অগ্রিম টিকিট কেটেছিলেন, তাদের টিকিট ফেরত দেয়ার জন্য। কখন ট্রেন চলাচল শুরু হবে আমাদের জানা নেই।’

আগে থেকে এ বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় স্টেশনে যাত্রীদের কোন চাপ নেই বলেও জানান শাজাহান আলী।

banner close
banner close