
দিনাজপুরে এক হিন্দু যুবকের বিরুদ্ধে অবৈধ প্রেমের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ১৫ বছর বয়সী এক অসহায় মুসলিম নাবালিকা মেয়েকে হত্যার হুমকি দিয়ে একাধিকবার গণধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া ভয় দেখানোর জন্য অভিযুক্ত হিন্দু যুবকের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়ারও অভিযোগ এসেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ৩৬ বছর বয়সী উপেন চন্দ্র পাল কালুকে সোমবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গণধর্ষণের ঘটনার পর মুসলিম নাবালিকাকে উদ্ধারকারী ‘Save Our Sisters’ নামক একটি সংগঠনের দিনাজপুরের একটি প্রতিনিধি দল বাংলা এডিশনকে জানায়, জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার নশতপুরের বশির মেম্বার পাড়া গ্রামে বসবাস করা ভুক্তভোগী নাবালিকাকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করে আসছিল একই গ্রামের হিন্দু যুবক উপেন চন্দ্র পাল কালু।
অবৈধ প্রেমের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বাহির থেকে নিজের বাসায় ফেরার পথে কালু ও তার হিন্দু সহযোগীরা ভুক্তভোগীকে পেছন থেকে মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক হাত-পা বেঁধে নির্জন একটি জায়গায় নিয়ে প্রথমে মারধর এবং পরে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
ভুক্তভোগীকে কালু ও তার সহযোগীরা এ ঘটনায় মুখ খুললে স্থানীয় সবাইকে বলে দিয়ে সম্মানহানি করা ও হত্যার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে কালু ও তার সহযোগীরা ব্ল্যাকমেইল করে ওই মুসলিম নাবালিকাকে একাধিক বার গণধর্ষণ করে।
একপর্যায়ে মুসলিম মেয়েটি এসব সহ্য করতে না পেরে সমস্ত ঘটনা তার মাকে বলে দেয়। পরে গত ১৪ ডিসেম্বর তারিখে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ভুক্তভোগী থানায় একটি মামলা দায়ের করলে তা উঠিয়ে নেয়ার জন্য আসামি স্থানীয় আরও কিছু উগ্র প্রভাবশালী হিন্দুদের সাথে নিয়ে ওই মুসলিম নাবালিকার মাকে হত্যার হুমকিসহ নানাভাবে চাপ দিতে থাকে।
মামলা উঠিয়ে না নেয়ায় গত ৮ জানুয়ারি তারিখ আসামি কালু তার সহযোগীদের নিয়ে ভুক্তভোগীর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে হত্যাচেষ্টা করে। এ বিষয়গুলো জানাজানি হলে ‘Save Our Sisters’ নামক সংগঠন ও স্থানীয় কিছু মুসলিম যুবকের একান্ত প্রচেষ্টায় ঘটনার প্রায় এক মাসেরও পর আসামি কালুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আসামিকে গ্রেফতারের ঘটনায় ‘Save Our Sisters’ সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের কাজ এখনো শেষ হয়নি। এই কুলাঙ্গার ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত তারা সকাল প্রকার কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।
স্থানীয়রা জানান, ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা এবং আত্মীয়-স্বজন বলতে কেউ নেই। তার মা ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করেন এবং মেয়েটি বিভিন্ন লোকের বাড়িতে কাজ করে। তারা এ ঘটনায় দ্রুত বিচার আশা করছেন।
মুসলিম মেয়েটি নাবালিকা হওয়ায় তার নাম-পরিচয় গোপন রাখা হলো।
আরও পড়ুন: