শুক্রবার

২ মে, ২০২৫
১৯ বৈশাখ, ১৪৩২
৪ জিলক্বদ, ১৪৪৬

ইনানী বীচ দখল নিচ্ছে পেভেল স্টোন রিসোর্ট

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১৪:২৮

শেয়ার

ইনানী বীচ দখল নিচ্ছে পেভেল স্টোন রিসোর্ট
পেভেল স্টোন রিসোর্টে। কোলাজ

কক্সবাজার উখিয়ার ইনানীতে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন (ইসিএ) এলাকায় সমুদ্র সৈকতের বালিয়াড়িতে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করেছে ইনানী পেভেল স্টোন রিসোর্টে।

জানা যায়, পরিবেশগত বিবেচনায় কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত থেকে টেকনাফ সমুদ্রসৈকতের ১০ হাজার ৪৬৫ হেক্টর এলাকার প্রাণবৈচিত্র্য, নির্মল জলরাশি এবং পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় ১৯৯৯ সালে এ এলাকাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে সরকার। 

এ নির্দেশনা মতে, কক্সবাজার পৌরসভার নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকত, সৈকতের ঝাউ গাছসমৃদ্ধ ৩০০ মিটার উন্নয়ন নিষিদ্ধ ও ৫০০ মিটার সংরক্ষিত এলাকা। এ এলাকায় সব ধরনের স্থাপনা বা অবকাঠামো নির্মাণ করা নিষিদ্ধ। কিন্তু, সরকারের পট পরিবর্তনের সুযোগে বেআইনিভাবে সৈকতের বালিয়াড়িতে স্থাপনা নির্মাণ করে হোটেল বা রিসোর্টে ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছে ইনানী পেভেল স্টোন রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইনানী পেভেল স্টোনের পিছনে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের পরে এখন আবার তাদের পুরাতন বিল্ডিং ভেঙে সংস্কার করছে। বিল্ডিং ভাঙ্গার পরে নষ্ট হওয়া বিভিন্ন (ভাঙ্গা ব্যবহারের অযোগ্য) ইট, কংকর, বীচের বালিয়াড়িতে স্তূপ করা হচ্ছে। যার করণে নষ্ট হচ্ছে সৈকতের পরিবেশ। কাজে ব্যবহৃত শ্রমিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, সমুদ্র সৈকতে এসব স্তূপ করার জন্য পেভেল স্টোনের ম্যানেজার নিজে নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন। 

এ বিষয়ে জানতে ঐ রিসোর্টের ম্যানেজারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাম্ভিকতার সুরে এর বাহিরে তাদের মালিকানাধীন আরো ১০ শতক জমি আছে বলে দাবি করেন৷ 

সমুদ্র সৈকত দখল করে স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে পরিবেশবাদী জসিম আজাদ বলেন, প্রাণবৈচিত্র্য, নির্মল জলরাশি এবং পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় সরকার ওই এলাকাকে ইসিএ ঘোষণা করলে প্রভাবশালীরা বিভিন্নভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সমুদ্র সৈকত দখল করে ইনানী বীচ গিলে খাচ্ছে পেভেলস্টোন সহ বেশকয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রভাবশালীদের থামাতে প্রশাসনের কঠোর হওয়া জরুরি।

এদিকে উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় গত ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে ইনানী বীচ এলাকার সকল অবৈধ স্থাপনাসমূহ সরানো না হলে ৭ ডিসেম্বর সকাল ১০ টা থেকে উখিয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করার কথা থাকলেও তা আর আলোর মুখ দেখিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন,"বীচে কোন ধরণের অবৈধ স্থাপনা তৈরি করা হলে অবশ্যই উচ্ছেদ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

সহকারী কমিশনার (ভূমি) যারীন তাসনিম তাসিনের কাছে অবৈধ স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযান করা হবে কিনা? জানতে চাইলে তিনি এই অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে কোন ধরণের বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।

banner close
banner close