শুক্রবার

২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১০ পৌষ, ১৪৩২

খুলনার খুন হওয়া টিপু চরমপন্থী থেকে হয়েছেন আওয়মী লীগ নেতা

খুলনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১৩:১৮

শেয়ার

খুলনার খুন হওয়া টিপু চরমপন্থী থেকে হয়েছেন আওয়মী লীগ নেতা
গোলাম রব্বানী টিপু। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সিগাল পয়েন্টে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হওয়া গোলাম রব্বানী টিপু ছিলেন চরমপন্থী নেতা। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম দেখিয়ে ও উর্দ্ধতন নেতৃবৃন্দের আস্থাভাজন হয়ে দখল করে নেন খুলনা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতির পদ। এবং দলীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর।

ছাত্র জনতার আন্দোলনে ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ছিলেন পলাতক। সে অবস্থান থেকেই বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাত ৮ টায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সিগাল পয়েন্টে সন্ত্রাসীদের গুলিতে হন নিহত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র।

এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায়, গোলাম রব্বানী টিপু চরমপন্থী নেতা থাকাকালীন দৌলতপুরে তার একচ্ছত্র অধিপত্য বিস্তার করেছিলেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ানের হাত ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। রাজনীতিতে হয়ে ওঠেন সক্রিয়। বাগিয়ে নেন খুলনা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতির পদ।

এরপর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দৌলতপুরের আরেক চরমপন্থী নেতা হুজী শহীদের সাথে টিপুর দ্বন্দ্ব শুরু হয়। একপর্যায়ে ২০১৫ সালে হুজি শহীদকে হত্যার দায়ে তার পরিবার টিপুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এরপর গোলাম রব্বানী টিপু শুরু করেন জমির ব্যবসা, তেল ডিপো থেকে চাঁদা নেয়া, জুয়ার ক্লাব নিয়ন্ত্রণ, দৌলতপুরের মাহিন্দ্রা সিএনজি ষ্ট্যান্ড নিজের নিয়ন্ত্রণে নেয়া। এভাবেই প্রায় সকল কিছুই তার দখলে চলে আসে। একটা পর্যায়ে বিভিন্ন মহলের সাথে তার দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যায়।

এরপর ২০২৩ সালে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি। ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেনের পক্ষ নেন। পরিচিতি পান এসএম কামাল হোসেনের দৌলতপুরের একমাত্র হাতিয়ার হিসেবে।

গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা যায়, গোলাম রব্বানী টিপুর নামে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের শেল্টার দাতা, দৌলতপুরে জুয়ার ক্লাব পরিচালনা এবং জমি দখলবাজের খাতায়ও রয়েছে তার নাম। তবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় সে ধরা ছোয়ার বাইরে ছিলো। আর ৫ই আগষ্টের পর সে আত্মগোপনে চলে যায়।

দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মীর আতাহার আলী বলেন, নিহত গোলাম রব্বানী টিপু কক্সবাজারে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বিষয়টি জেনেছি। সে খুলনার দৌলতপুর ৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর। তার বিরুদ্ধে ২টি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। যার একটি হুজি শহীদ হত্যা মামলা আর একটি মারামারি।



banner close
banner close