
লক্ষ্মীপুরের একটি মারামারি-হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি সজীব ও সাইফুল ইসলাম শুভ রয়েছেন বিদেশে। অথচ অভিযোগ উঠেছে, তাদের নাম-পরিচয় ব্যবহার করে ভিন্ন দুই ব্যক্তিকে আদালতে হাজির করে বেআইনিভাবে জামিন করানোর।
প্রতারণার এ বিষয়ে ওই মামলার বাদী শামছুননেছা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এ ঘটনায় জড়িতদের বুধবার বেলা ১২টায় জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইসমাইলের আদালতে হাজির করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে বাদীর আইনজীবী মো. রায়হান ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় আদালত সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর কাছে লিখিতভাবে ব্যাখ্যাও জানতে চেয়েছেন।’
সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার মোরশেদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. লুৎফুর রহমান রহিম গাজী।
লিখিত ব্যাখ্যায় আদালতকে তিনি জানান, ‘আইনজীবীর সহকারী আবুল কাশেমের পরামর্শে মামলার ২ ও ৪ নম্বর আসামি প্রবাসে থাকার বিষয়টি গোপন রেখেছেন অন্যরা।’
আদালত ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের সোন্দড়া গ্রামের আবদুল খালেকদের সঙ্গে কয়েক বছর ধরে তাজুল ইসলাম খোকাদের জমিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে ২০২৩ সালে আদালতে মামলা হয়। ২০২৪ সালের ১৯ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রামগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মনিরুজ্জামান আদালতে চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তারা হলেন- তাজুল ইসলাম খোকা, সজীব, আনোয়ার হোসেন ও সাইফুল ইসলাম শুভ। এদিকে ঘটনার পর আসামি সজীব সৌদি আরব ও সাইফুল কাতার চলে যান।
অন্যদিকে, গত বছরের ৩০ জুন আসামি খোকা ও আনোয়ার জামিন নেন। তখন সজীব ও সাইফুলের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালতের বিচারক। আসামিরা বিদেশে রয়েছেন। কিন্তু গত ৬ নভেম্বর মামলার ২ ও ৪ নম্বর আসামির স্থলে ভিন্ন ব্যক্তিদের রামগঞ্জ আমলি আদালতে উপস্থিত করা হয়। পরে আদালত তাদের জামিনে মুক্তির আদেশ দেন। তবে আদালতে উপস্থিত করা ভুয়া ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
ঘটনাটি জানতে পেরে ৮ ডিসেম্বর বাদী শামছুননেছা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামি সজীব ও সাইফুলকে স্বশরীরে হাজির হওয়ার জন্য ও তাদের জামিনের আদেশ বাতিল করতে আবেদন করেন। একই সঙ্গে আসামিদের নিযুক্ত কৌঁসুলি ও স্থানীয় জামিনদারের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন করেছেন।
এতে আদালতের বিচারক ঘটনাটি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চান। পরে ২৯ ডিসেম্বর আসামিদের আইনজীবী রহিম গাজী আদালতে লিখিত ব্যাখ্যা দেন। একই ব্যাখ্যা আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদককে দিয়েছেন তিনি।
এতে তিনি জানান, আইনজীবী সহকারী আবুল কাশেম দুইজন লোককে এনে আসামি হিসেবে আদালতে উপস্থিত করান। পরে তাদের জামিন করানো হয়। তিনি আসামিদের চিনতেন না।
আরও পড়ুন: