
কক্সবাজারের পেকুয়ায় টইটং খালের উপর রাবারড্যাম অংশে কৃত্রিম মাটির বাঁধ তৈরী না হওয়ায় প্রায় আড়াই হাজার একর জমিতে বোরোচাষ ব্যাহত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে খালে বাঁধ দিয়ে পাহাড়ের ছড়া থেকে নেমে আসা মিঠা পানি আটকিয়ে প্রতি বছর বোরো চাষ করা হতো।
এখনো ওই স্থানে মাটির বাঁধ নির্মিত না হওয়ায় কৃষকরা দুশ্চিন্তায় রয়েছে। তবে জরুরী বরাদ্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে বলে দাবী এলজিইডির।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বিগত ২০০৫ সালে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) প্রবাহমান টইটং খালের উপর একটি রাবারড্যাম নির্মাণ করে। পরে ২০১১ সালে সরকারী কর্তৃপক্ষ কৃষকদের সমন্বিত উদ্যোগে সংগঠিত টইটং সোনাইছড়ি পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডের উপর রাবারড্যামের দায়িত্বভার ন্যস্ত করে।
২০২২ সালের দিকে রাবারড্যামটি কারিগরি বিচ্যুতির কারণে খালের তলদেশে রাবারটি ছিদ্র হয়ে যায়। তারপর বোরোচাষসহ কৃষি উৎপাদনে মারাত্মক সংকট দেখা দেয়।
২০২৩ সাল থেকে সরকার সংশ্লিষ্ট দফতরের মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্ধ দিয়ে কৃষি উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে সরকার মাটির বাঁধ তৈরী করে আসছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টইটং পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে মাটির বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্ধ পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন। আবেদনটি পেকুয়ার এলজিইডি হয়ে ঢাকার হেড অফিসে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে চলতি বোরো মৌসুম শুরু হয়েছে বলে জানিয়ে স্থানীয় কৃষক ও স্কিম মালিক নুরুল ইসলাম ও আহসান হাবিব বলেন, ‘দ্রুত সময়ে খালের উপর মাটির বাঁধ না দিলে টইটংয়ের হিরাবুনিয়া, পশ্চিম সোনাইছড়ি, নাপিতখালী, বড়পাড়া, নিত্যান্তঘোনা, শের আলী মাষ্টারপাড়া, সোনাইয়াকাটা, পন্ডিতপাড়া, মিয়াজিঘোনা, ধনিয়াকাটা, ভেলোয়ারপাড়া, বারবাকিয়া ইউনিয়নের নয়াকাটা, নোয়াখালীপাড়া, আন্নরআলী পাড়া, কাদিমাকাটাসহ বিপুল অংশে কৃষিচাষ অনিশ্চয়তায় থাকবে। প্রায় আড়াই হাজার একর জমিতে বোরো চাষ হবে না।’
এ ব্যাপারে টইটং পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি ডা. নুরুল কবির জানান, ‘আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। খুব দ্রুত সময়ে মাটির বাঁধ না দিলে ৮০ হাজার মানুষ খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে থাকবে। ব্যাহত হবে আড়াই থেকে তিন হাজার একর জমিতে বোরো চাষাবাদসহ শীতকালীন সবজির আবাদ।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী আসিফ মাহামুদ জানান, ‘আমরা বরাদ্দের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছি। অর্থ বরাদ্ধ সাপেক্ষে কাজ শুরু করা হবে।’
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মঈনুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমি কিছুদিন আগে একটি লিখিত আবেদন পেয়েছি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে এলজিইডিকে বলা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ে কাজ শুরু করা হবে।’
আরও পড়ুন: