শুক্রবার

২ মে, ২০২৫
১৯ বৈশাখ, ১৪৩২
৫ জিলক্বদ, ১৪৪৬

সরাইলে সরকারি খাল দখল: পানিবন্দি শতাধিক পরিবার 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১৭:০৮

শেয়ার

সরাইলে সরকারি খাল দখল: পানিবন্দি শতাধিক পরিবার 
পানিবন্দি শতাধিক পরিবার। ছবি: বাংলা এডিশন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা'র পাকশিমুল ইউনিয়নের ভূইশ্বর গ্রামে অবৈধভাবে সরকারি খাল ভরাট করেছে স্থানীয় সুলতান মিয়া নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। ফলে ব্যহত হচ্ছে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা, এতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে পানিবন্দি চার পাড়ার কয়েক শতাধিক পরিবার। 

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকালে ভূইশ্বর দক্ষিণ পাড়া এলাকায় সরেজমিনে গেলে চোখে পরে এমন দৃশ্য। অপরিকল্পিত এ ভরাটের ফলে অনুপযোগী হয়ে উঠেছে চলাচলের একমাত্র সড়কটি। পাশাপাশি দীর্ঘদিন জমে থাকা পানি থেকে ছড়িয়ে পরছে রোগবালাই ও দুর্গন্ধ। 

স্থানীয়দের অভিযোগ ইতিমধ্যেই খাল ভরাটের বিষয়ে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক'কে লিখিত ভাবে অভিযোগ করলেও আসছে না সুফল। ভরাট চলাকালীন সময়ে অভিযোগ পেয়ে সরাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরেজমিনে গিয়ে খাল ভরাট বন্ধের নির্দেশ দিলেও, কোনো কথায় শুনেননি দখলদার রা। উল্টো এসিল্যান্ড ও স্থানীয় চেয়ারম্যান এর সামনেই অভিযোগ'কারীদের উপর চড়াও হন দখলদার বাহিনী। এতে স্থানীয় কয়েকজন আহত হয়। 

ভুক্তভোগীদের পক্ষে স্থানীয় মুরুব্বি ওমর খাঁ বলেন, এই রাস্তা ছাড়া আমাদের চলাচলের আর কোনো মাধ্যম নেই। এখন আমরা আশপাশের বাড়িঘরের উপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। চলাচলের পথে ময়লা পানি জমে থাকায় অনেক সময় আমরা জরুরি কাজ থাকলেও বাহিরে যেতে পারিনা বা নামাজ পড়তে মসজিদেই যেতে পারছি না। খালটি যারা ভরাট করেছে তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসন কারোর বাঁধাই মানছে না। 

তবে খাল দখলের বিষয়ে অভিযুক্ত সুলতান মিয়া নকশা দেখিয়ে খালকে রাস্তা দাবি করে বলেন, আমার ও আশপাশের সকলের চলাচলের স্বার্থে এটি ভরাট করে রাস্তা বানিয়েছি। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা পরবর্তীতে করা হবে। যারা খাল ভরাটের অভিযোগ করছে তাদের পানি এদিকে নিষ্কাশন করতে হলে আরও দুটি বাড়ি পার করে আনতে হবে কিন্তু তারা এদিকে দিতে রাজি না, এখন আমার কি করার আছে।

তবে খাল ভরাটের অনুমতি আছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি প্রথমে জেলা প্রশাসকের অনুমিত নিয়েছেন দাবি করলেও কাগজ দেখতে চাইলে বলেন, আমি আবেদন করে রেখেছি অনুমোদন এখনো পাইনি। 

এদিকে খাল দখল ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিয়ে যায় এলাকাজুড়ে বিরাজ করলে অশান্তি। যেকোনো মুহুর্তে আইন শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা করে সুশীল সমাজের অনেকেই মনে করছেন দ্রুত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সমাধান করা জরুরি। 

এ বিষয়ে পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাউসার হোসেন বলেন, এলাকার শান্তির স্বার্থে আমি একাধিকবার চেষ্টা করেও সমাধান করা সম্ভব হয়নি। আমাদের বাঁধার পরেও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করেই খালটি ভরাট করা হয়েছে। 

সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মোশারফ হোসাইন বলেন, সরকারি খাল দখল করার কোনো সুযোগ নেই। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

 

 

banner close
banner close