বৃহস্পতিবার

১ মে, ২০২৫
১৮ বৈশাখ, ১৪৩২
৩ জিলক্বদ, ১৪৪৬

হরিরামপুরে পদ্মায় নাব্যতা সংকটে ২০টি পন্যবাহী কোস্টার জাহাজ আটকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০৪

আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০৬

শেয়ার

হরিরামপুরে পদ্মায় নাব্যতা সংকটে ২০টি পন্যবাহী কোস্টার জাহাজ আটকা
পণ্যবাহী কোস্টার জাহাজ। ছবি: বাংলা এডিশন

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের আন্ধামানিক ঘাট এলাকায় প্রায় দেড় মাস ধরে নিয়মিত আটকা পড়ছে বিভিন্ন পণ্যবাহী কোস্টার জাহাজ। বর্তমানে এ পয়েন্টে কয়লা সার, পাথরসহ অন্যান্য পণ্যবাহী ২০ থেকে ২২টি কোস্টার জাহাজ আটকে আছে।

জানা যায়, মাওয়া-নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী নৌপথে নিয়মিত চলাচল করে বিভিন্ন পণ্যবাহী এই কোস্টার জাহাজ। বর্ষার পানি কমতে শুরু হলেই শুকনো মৌসুমে পদ্মার বুকে ছোট-বড় অনেক ডুবোচর জেগে উঠে। এই চ্যানেলের বিভিন্ন পয়েন্টে ডুবোচরের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে পদ্মার নাব্য সংকট। হরিরামপুরের ধূলশুড়া এলাকা থেকে লেছড়াগঞ্জের সেলিমপুর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার নদী পথে এই নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। এতে পানির প্রয়োজনীয় গভীরতা না থাকায় চট্টগ্রাম,  মোংলা ও নারায়ণগঞ্জ নৌবন্দর থেকে ছেড়ে আসা উত্তরাঞ্চলের জ্বালানি তেলবাহী ও বিভিন্ন মালবোঝাই জাহাজগুলো সরাসরি নগরবাড়ী ও বাঘাবাড়ী বন্দরে যেতে পারছে না। হরিরামপুর উপজেলা পয়েন্টে আন্ধারমানিক ঘাট এলাকায় গিয়ে জাহাজগুলো আটকা পড়ে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার সরেজিমনে দেখা যায়, এই ঘাটে আটকা পড়েছে কয়লা, ক্লিংকার (সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল) ও সার বোঝাই করা ২০ থেকে ২২টি জাহাজ। সেখানে শতাধিক শ্রমিক বিভিন্ন জাহাজ থেকে কয়লা, ক্লিংকার ও সার নামিয়ে ছোট ছোট জাহাজ ও বাল্কহেডে বোঝাই করছেন। বোঝাইয়ের পর বাল্কহেডগুলো সেখান থেকে পাবনার নগরবাড়ী ও সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী নৌবন্দর অভিমুখে ছেড়ে যাচ্ছে।

চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা এমভি এস টি এস- ৪ এর সুখানি আমিনুল ইসলাম জানান, আমরা পাবনা নগর বাড়ি সরকারি টিএসপি সার নিয়ে যাব। কিন্তু নদীতে পানি কম হওয়ায় আমরা হরিরামপুরের আন্ধারমানিক ঘাটে চারদিন যাবৎ আটকা আছি। আসলে এই সময়ে সার কৃষকের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। কিন্তু নাব্য সংকটে জাহাজ আটকে আছে। এখন ছোট ছোট বাল্কহেডে লোড করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে লোড আনলোডে প্রচুর সময় অপচয় হচ্ছে।

এমভি বসুন্ধরা -৪ জাহাজের সুখানি আল ইমরান শেখ জানান, আমরা দুই দিন যাবৎ এখানে আটকা আছি। নদীতে তুলনামূলকভাবে পানি অনেকটাই কম। তাই কিলিংকারগুলো বাল্কহেডে লোড দিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই মৌসুমে প্রতিবছর আমাদের এই ভোগান্তি পোহাতে হয়। কত দিন নিউজ, কত কিছু হলো। কিন্তু আমার ভোগান্তির সমাধান হচ্ছে না।

আন্ধারমানিক ঘাটের ট্রলার চালক হাশেম জানান, প্রতি বছর এই সময়টা এই এলাকায় প্রচুর পরিমাণে ডুবোচর জেগে উঠে। ফলে নৌযান চলাচলে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হয়। প্রায় দেড়মাস যাবৎ এখানে ২০/২২ টি জাহাজ ভিড়ে আছে। নদীতে পানি কম থাকায় আটকা পড়েছে। শুধু তাই নয়, আন্ধারমানিক ঘাট থেকে চরাঞ্চলের হরিণা ঘাটে ইঞ্জিন চালিত ট্রলারেও যাতায়াতে আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বিআইডাব্লিউটিএর আরিচা অঞ্চলের ড্রেজিং ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান আহমেদ জানান, বিষয়টি আমরা অবগত আছি। গত এক সপ্তাহ আগে ড্রেজিং এর জন্য প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। অনুমোদন পেলেই আমরা প্রাথমিকভাবে দুটি ড্রেজার বসিয়ে ড্রেজিং এর কাজ শুরু করব।

banner close
banner close