
চোরাচালানের অন্যতম নিরাপদ রুট হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে ভারত সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা। সম্প্রতি এ উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে প্রতিবেশি দেশটিতে রসুন পাচারের খবর মিলেছে। সীমান্তবর্তী এই উপজেলাটি রীতিমতো চোরাচালানের বন্দরে পরিনত হয়েছে।
সাধারণ মানুষ বলছেন, দেশের তুলনায় ভারতের বাজারে রসুনের দাম বেশি হওয়ায় জীবননগর সীমান্ত দিয়ে পাচার হচ্ছে রসুন। দেশের বাজারে দেশী রসুন প্রতি কেজি ২০০-২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর এসব রসুন ভারতীয় সীমানা পার করে দিলেই কেজিপ্রতি ৪০-৫০ টাকা দাম বেশি পাওয়া যায়। মূলত এ কারণে রসুন পাচার বাড়ছে। অবৈধভাবে ভারতে রসুন পাচার হলেও তা বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নেই কোনো উদ্যোগ।
চুয়াডাঙ্গার অন্যতম বড় পাইকারি বাজার হলো জীবননগর পৌর কাচা বাজার। ভারত সীমান্তবর্তী হওয়ার কারণে খুব সহজে এ বাজার থেকে দৈনিক কয়েকশ মন রসুন বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে পাচার হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ বাজারের কয়েকজন ব্যাবসায়ী জানান, সম্প্রতি ভারতে রসুন পাচারের ঘটনা বেড়েছে। জীবননগর বাজারের পাইকারি আড়ৎ থেকে একশ্রেণীর অসাদু ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে রসুন কিনছেন চোরাকারবারিরা। তারপর সেটি সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করছেন বেশি মুনাফার আশায়।
ওই ব্যবসায়ীদের মতে, ভারতে রসুন পাচার হওয়ার কারণে বাংলাদেশ রসুনের দাম বেড়েই চলছে। ২০০ টাকার দেশি রসুনের দাম বেড়ে দাড়িয়েছে ২৪০ টাকা। সেসব রসুনই ভারতের বিভিন্ন খোলাবাজারে এখন ৩৮০ থেকে ৪২০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। লাভের পরিমাণ বেশি হওয়ায় রসুন পাচার ক্রমে বাড়ছে।
উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের নতুন পাড়ার উল্টো দিকে ভারত সীমানায় তার কাটা সংস্কার করছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। যার ফলে সমস্থ তার কাটা সরিয়ে ফেলেছে সীমান্ত থেকে। আর এই সুযোগে নতুনপাড়ার ওই চোরাচালান সিন্ডিকেট মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জীবননগর বাজার থেকে ইজিবাইক ও ব্যাটারি চালিত ভ্যান যোগে রসুন চলে যায় ভারত লাগোয়া গ্রাম নতুন পাড়া বাজারে। এরপর সেসব রসুন নিয়ন্ত্রণে নেন একই গ্রামের জুলু, হাফিজুলসহ বেশ কয়েকজন চোরাকারবারি। তারপর সন্ধার সময় সুযোগ বুঝে রসুনগুলো পাচার করা হয় ভারতে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৫৮ বিজিবির পরিচালক শাহ মো. আজিজুস শহীদ বলেন, ‘সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান রোধে বিজিবি সবসময় তৎপর ছিল, এখোনো আছে। জীবননগর সীমান্ত দিয়ে রসুন পাচারের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেবো।
আরও পড়ুন: