বুধবার

৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

যৌন হয়রানিমূলক ভিডিও বানাতে দ. কোরিয়ায় লক্ষাধিক আইপি ক্যামেরা হ্যাক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০২:২১

শেয়ার

যৌন হয়রানিমূলক ভিডিও বানাতে দ. কোরিয়ায় লক্ষাধিক আইপি ক্যামেরা হ্যাক
সংগৃহীত ছবি

১ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি ক্যামেরা হ্যাক করে যৌন হয়রানিমূলক ভিডিও তৈরির অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত ক্যামেরা হ্যাক করে বিদেশি ওয়েবসাইটের জন্য ভিডিও তৈরির অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রোববার দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশ বলেছে, অভিযুক্তরা ক্যামেরার ইন্টারনেট প্রোটোকল (আইপি) দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে হ্যাক করেছিল। তুলনামূলক দুর্বল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা ক্যামেরাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য। পরে এসব ক্যামেরার ধারণ করা বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের গোপন ভিডিও চুরি করতেন হ্যাকাররা।

সিসিটিভির তুলনায় সস্তা বিকল্প আইপি ক্যামেরা দক্ষিণ কোরিয়ায় ‘হোম ক্যামেরা’ নামেও পরিচিত। বাসার ইন্টারনেট সংযোগের সঙ্গে যুক্ত থাকে এসব ক্যামেরা; যা সাধারণত বাসার নিরাপত্তা কিংবা শিশু ও পোষা প্রাণীর দেখভালের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়।

দেশটিতে হ্যাকিংয়ের শিকার সব ক্যামেরার অবস্থান হিসেবে ব্যক্তিগত বাসা-বাড়ি, কারাওকে কক্ষ, একটি পিলাটিস স্টুডিও এবং একটি স্ত্রীরোগ বিষয়ক ক্লিনিকের মতো জায়গার কথা জানা গেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে, চার সন্দেহভাজন পৃথকভাবে এই হ্যাকিংয়ের কাজ করেছে। তারা পরস্পরের মাঝে যোগসাজশ করেনি।

সন্দেহভাজনদের একজন ৬৩ হাজার ক্যামেরা হ্যাক করে ৫৪৫টি যৌন হয়রানিমূলক ভিডিও তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি এসব ভিডিও ৩৫ মিলিয়ন উন (১২ হাজার ২৩৫ মার্কিন ডলার) মূল্যের ভার্চুয়াল সম্পদের বিনিময়ে বিক্রি করেন।

অন্যজন ৭০ হাজার ক্যামেরা হ্যাক করে ৬৪৮টি ভিডিও ১৮ মিলিয়ন উনের সমপরিমাণ সম্পদের বিনিময়ে বিক্রি করেছেন। গত এক বছরে আইপি ক্যামেরার হ্যাকিং ভিডিও অবৈধভাবে বিতরণকারী একটি ওয়েবসাইটে পোস্ট করা মোট ভিডিওর প্রায় ৬২ শতাংশই ওই দুই সন্দেহভাজনের।

বর্তমানে দেশটির পুলিশ ওই ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ এবং এর পরিচালকের বিরুদ্ধে তদন্তে বিদেশি সংস্থার সহযোগিতা নিচ্ছে। এছাড়া এই ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে; যারা ওই সাইট থেকে ভিডিও কিনে দেখেছিলেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশের সাইবার তদন্ত শাখার প্রধান পার্ক উ-হিউন বলেছেন, ‌‌আইপি ক্যামেরা হ্যাকিং ও অবৈধ চিত্রায়ন ভুক্তভোগীদের জন্য গভীর দুর্ভোগ তৈরি করে। যে কারণে এটি গুরুতর অপরাধ। আমরা কঠোর তদন্তের মাধ্যমে এটি নির্মূল করব।

‌‌‌‘‘অবৈধভাবে ধারণ করা ভিডিও দেখা ও নিজের কাছে রাখাউভয়ই গুরুতর অপরাধ। এ কারণেও আমরা সক্রিয়ভাবে তদন্ত কাজ পরিচালনা করবো।’’

কর্তৃপক্ষ ৫৮টি স্থানে ভুক্তভোগীদের কাছে গিয়ে কিংবা নোটিশ পাঠিয়ে এই ঘটনার বিষয়ে জানিয়েছে এবং পাসওয়ার্ড পরিবর্তন সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দিয়েছে। তারা ভুক্তভোগীদের ভিডিও মুছে ফেলতে ও ব্লক করতে সহায়তা করছে।

সূত্র: বিবিসি, দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট।



banner close
banner close