ভূমিকম্প বিশ্বে এখন বহুল আলোচিত বিষয়। নিয়মিতই বিশ্বের কোনো না কোনো প্রান্তে ভূমিকম্পের খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে কিছু দেশ রয়েছে যেগুলোতে ভূমিকম্পের ঝুঁকি তুলনামূলক কম। ওই দেশগুলো প্রধান ভূমিকম্পের ফল্ট-লাইন থেকে অনেক দূরে অবস্থিত হওয়ায় সাধারণত প্রাকৃতিকভাবে ভূমিকম্প হয় না।
উত্তর-মধ্য আফ্রিকার দেশ চাদে ভূমিকম্প ঝুঁকি অত্যন্ত কম। সবচেয়ে কাছের ফল্ট লাইন আফ্রিকা ও আরবীয় প্লেট সীমান্ত, যা দেশটি থেকে প্রায় ২ হাজার ১০০ কিলোমিটার দূরে। তবে বন্যা, খরা, দাবানলের মতো অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপদের ঝুঁকি রয়েছে। নাইজার কোনো প্রধান ফল্ট-লাইনের কাছে নেই। ভূমিকম্পের ঝুঁকি কম হলেও দেশটিতে বন্যা, খরা ও উচ্চ তাপমাত্রা জনজীবন প্রভাবিত করতে পারে।
পশ্চিম আফ্রিকার একটি দেশ আইভরি কোস্ট। সেখানে ভূমিকম্পের ঝুঁকি বেশ কম। স্থলবেষ্টিত দেশ বুরকিনা ফাসোতে ভূমিকম্পের ঝুঁকি কম হলেও বন্যা, খরা ও আগুনের ঝুঁকি রয়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং দীর্ঘ শুষ্ক মৌসুম কৃষি উৎপাদন প্রভাবিত করছে।
কম ঝুঁকিপূর্ণ যে দেশে যেতে ভিসা লাগে না বাংলাদেশিদের
ক্যারিবীয় প্লেটের ফল্ট লাইন থেকে প্রায় ৪৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বাহামা। ভূমিকম্প খুবই বিরল হলেও উপকূলীয় বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকি বেশি দেশটিতে।
ভূমিকম্পে সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ এই দেশে যেতে ভিসা লাগে না বাংলাদেশিদের। বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য নিঃসন্দেহে এটি এক দারুণ খবর! কিন্তু কোথায় সেই দেশ? উত্তর হলো, দক্ষিণ আমেরিকার বাহামা দ্বীপপুঞ্জ।
ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ড অ্যাটলাসের হিসাবে, ভূমিকম্পের সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে চাদ, নাইজার, বাহামা, আইভরি কোস্ট, বুরকিনা ফাসো, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, লাটভিয়া, আয়ারল্যান্ড ও উরুগুয়ে। এই দেশগুলো প্রধান ভূমিকম্পের ফল্টলাইন থেকে অনেক দূরে অবস্থিত হওয়ায় সাধারণত প্রাকৃতিকভাবে ভূমিকম্প হয় না।
বাহামায় ভূমিকম্পের ঝুঁকি কেন কম?
বাহামা ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল থেকে অনেকটা দূরে অবস্থিত। দেশটির নিকটতম প্রধান ফল্ট লাইন– উত্তর আমেরিকান ও ক্যারিবীয় টেকটোনিক প্লেটের সীমান্ত প্রায় ৪৮০ কিলোমিটার দূরে। ফলে বাহামায় ভূমিকম্প খুবই বিরল। তবে ওই ফল্ট লাইন ক্যারিবীয় অন্যান্য দেশে ভূমিকম্প সৃষ্টি করলে তার প্রভাব কিছু ক্ষেত্রে দূরবর্তী অঞ্চল হিসেবে বাহামাতেও অনুভূত হতে পারে।
পাসপোর্ট ইনডেক্সের তথ্যমতে, বাংলাদেশের নাগরিকরা বর্তমানে মাত্র ১৫টি দেশে ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার পান। সেগুলো হলো বাহামা, বার্বাডোজ, ভুটান, ডমিনিকা, ফিজি, গাম্বিয়া, গ্রেনাডা, হাইতি, জ্যামাইকা, কিরিবাতি, মাইক্রোনেশিয়া, রুয়ান্ডা, সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রেনাডাইনস, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো এবং ভানুয়াতু।
বাহামার ইমিগ্রেশন বিভাগ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ভিসা নিয়ন্ত্রণ চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য বাহামিয়ান ভিসার প্রয়োজনীয়তা মওকুফ করা হয়েছে। বাংলাদেশিরা বাহামায় পর্যটক হিসেবে তিন মাস বা কিছু ক্ষেত্রে আট মাস পর্যন্ত থাকতে পারবেন।উত্তর ইউরোপের সুন্দর একটি দেশ ফিনল্যান্ড। তাদের সবচেয়ে কাছের ফল্ট লাইনও ২ হাজার ১০০ কিলোমিটার দূরে। তবে খনন বা বিস্ফোরণের কারণে মাঝেমধ্যে মানবসৃষ্ট ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ফিনল্যান্ডে বন্যা-দাবানলের মতো অন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যাও বেশ কম।
আরও যেসব দেশে কম ঝুঁকি
উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের দেশ ডেনমার্ক আফ্রিকান-ইউরেশিয়ান প্লেট সীমান্ত প্রায় ১ হাজার ৯৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ফলে ডেনমার্কে খুব কম ভূমিকম্প হয়, হলেও মাত্রা থাকে কম।
প্রধান ফল্ট লাইন থেকে ১ হাজার ১০০ কিলোমিটার দূরে থাকায় লাটভিয়ায় ভূমিকম্প দেখাই যায় না। তবে বসন্তকালে ভারি বৃষ্টিপাত ও বরফ গলনজনিত বন্যা হতে পারে। উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের দেশ আয়ারল্যান্ডে ভূমিকম্পের ঝুঁকি কম।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ উরুগুয়ে প্রধান ফল্ট লাইন থেকে প্রায় ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হওয়ায় ভূমিকম্প বিরল। তবে উপকূলবর্তী অবস্থানের কারণে বন্যার ঝুঁকি রয়েছে।
আরও পড়ুন:








