যুক্তরাষ্ট্র খুব শিগগির ভেনেজুয়েলাকে কেন্দ্র করে অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তত চার মার্কিন কর্মকর্তা। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ বাড়ানোর অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা মাদকের উৎস নির্মূল করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন সময় দেশটিতে অভিযান চালানোর অভিপ্রায় প্রকাশ করেছেন। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু মাদক অপরাধ দমন নয়, এই অভিযানের পেছনে অবশ্যই গভীর রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক লক্ষ্য রয়েছে। আবার প্রশ্ন উঠেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট চাইলেই যে কোনো দেশে হামলা চালানোর অনুমোদন দিতে পারেন কিনা।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ভেনেজুয়েলায় এই অভিযানের পরিসর কেমন হবে, কিংবা ট্রাম্প চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সাম্প্রতিক সময়ে সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করেছে এবং ওয়াশিংটনের সঙ্গে কারাকাসের সম্পর্ক আরও খারাপ হচ্ছে।
দুই মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন অভিযানের প্রথম ধাপ হিসেবে গোপন অভিযান শুরুর আশঙ্কাই বেশি।
পেন্টাগন এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং সিআইএ-ও কোনো মন্তব্য করেনি। ট্রাম্প প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গত শনিবার বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে মাদক ঢোকা বন্ধ করতে ও দায়ীদের শাস্তি দিতে আমেরিকার সব শক্তি প্রয়োগ করতে প্রস্তুত।
দুই কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, বিবেচনায় থাকা বিকল্পগুলোর মধ্যে মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার সম্ভাবনাও রয়েছে।
ট্রাম্পের সম্ভাব্য অভিযানের কারণ
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিষয়টি খুবই পরিষ্কার। ট্রাম্পের মূল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হলো ভেনেজুয়েলায় সরকার পরিবর্তন ঘটানো। আর অর্থনৈতিক দিক থেকে প্রধান কারণ হলো, জ্বালানি তেল। বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রমাণিত তেল মজুত রয়েছে ভেনেজুয়েলায়। দেশটির রাষ্ট্রীয়করণ নীতির কারণে মার্কিন তেল কোম্পানি এক্সনমবিল ও শেভরনের ব্যবসা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। আর এ পদক্ষেপের শুরু হয়েছিল মাদুরো এবং তাঁর আগের প্রেসিডেন্ট হুগো শাভেজের হাত ধরে।
অন্য দেশে হামলার অনুমোদন দিতে পারেন?
মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর ক্ষমতা মূলত কংগ্রেসের হাতে। কিন্তু গত কয়েক দশকে অনেক সময় প্রেসিডেন্টরা কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই সামরিক অভিযান চালিয়েছেন। ফলে বাস্তব পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট ও কংগ্রেসের ক্ষমতার সীমানা এখন বেশ অস্পষ্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইকেল গ্লেনন বলেন, কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়া প্রেসিডেন্ট কোনো দেশে হামলা চালাতে পারেন না, যদি না যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হামলা হয় বা তাৎক্ষণিক হুমকি থাকে। ইরান হামলার ক্ষেত্রে এমন কোনো তাৎক্ষণিক হুমকি ছিল না, তাই সেটি অসাংবিধানিক।
আরও পড়ুন:








