মঙ্গলবার

১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১ পৌষ, ১৪৩২

মাওবাদী বিদ্রোহী কমান্ডারকে হত্যার দাবি ভারতের

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর, ২০২৫ ০৬:৪৭

শেয়ার

মাওবাদী বিদ্রোহী কমান্ডারকে হত্যার দাবি ভারতের

দশকের পর দশক ধরে চলা সশস্ত্র আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর এক অভিযানে মাওবাদী বিদ্রোহী কমান্ডার হিদমাসহ ছয় মাওবাদী নিহত হয়েছেন। হিদমাসহ তার সহযোগীদের ‘ভয়ংকরতম’ গেরিলা হামলার জন্য দায়ী হিসেবে অভিহিত করে এই খবর নিশ্চিত করেছে ভারতের পুলিশ।

২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে দশকব্যাপী চলে আসা মাওবাদী বিদ্রোহ সম্পূর্ণরূপে শেষ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারত সরকার। মঙ্গলবারের অভিযান সম্পর্কে ভারতের জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা মহেশ চন্দ্র লাড্ডা বলেন, অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যে ‘পুলিশের সঙ্গে এক সংঘর্ষে’ শীর্ষ মাওবাদী কমান্ডার মাদভি হিদমা, তার স্ত্রী রাজে এবং আরও চারজন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।

তিনি বলেছেন, হিদমা ছিলেন সবচেয়ে ভয়ংকর মাওবাদী কমান্ডার। তার মাথার দাম ১ কোটি টাকা (প্রায় ১১০,০০০ ডলার) পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল বলেও জানান তিনি।

ভারতীয় পুলিশ বলেছে, এ অভিযানের সময় অ্যাসল্ট রাইফেল, পিস্তল এবং অনেক বিস্ফোরকও জব্দ করা হয়েছে। মাওবাদী বিদ্রোহ দমনের লক্ষ্যে নয়াদিল্লি সর্বাত্মক অভিযান শুরু করেছে। একই সঙ্গে আগামী মার্চের মধ্যে এই বিদ্রোহ পুরোপুরি দমনের অঙ্গীকার করেছে।

কয়েক দশক ধরে চলা সশস্ত্র সংগ্রাম স্থগিতের ঘোষণা দিয়ে দুই মাস আগে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মাওবাদী বিদ্রোহীরা। এই প্রস্তাবের মাঝেই মঙ্গলবার আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে মাওবাদী বিদ্রোহীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল।

এর আগে, গত মাসে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, ‘‘যারা আত্মসমর্পণ করতে চান, তাদের স্বাগত জানানো হবে। আর যারা এখনও অস্ত্র ধরবেন, তারা আমাদের বাহিনীর কাছ থেকে কঠোর জবাব পাবেন।’’

চীনা বিপ্লবী নেতা মাও সেতুংয়ের কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৬৭ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন ভারতের মাওবাদী বিদ্রোহীরা। আদিবাসী অধিকার বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর পক্ষে লড়াইয়ের দাবি করা মাওবাদীরা নকশাল নামেও পরিচিত। ওই বছর কয়েকজন গ্রামবাসী জমিদারদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার পর থেকে সংঘাতের সূচনা হয়। দেশটিতে তখন থেকে চলা মাওবাদীদের বিদ্রোহে এখন পর্যন্ত ১২ হাজারেরও বেশি বিদ্রোহী, সেনা সদস্য ও সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন।

২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে মাওবাদীরা দেশটির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেছিল এবং সেই সময় তাদের যোদ্ধার সংখ্যা ছিল ১৫ থেকে ২০ হাজার। তবে গত কয়েক বছরে মাওবাদী বিদ্রোহীদের শক্তি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।

গত অক্টোবরে দেশটির ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার বলেছিল, দুই দিনের অভিযানে মাওবাদী বিদ্রোহীদের জ্যেষ্ঠ নেতা মল্লোজুলা ভেনুগোপাল রাওসহ ২৫০ জনেরও বেশি সদস্য আত্মসমর্পণ করেছেন।

সূত্র: এনডিটিভি, এএফপি।



banner close
banner close