শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের মঞ্চে উঠলে, এভাবেই অপদস্ত হন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
ফিলিস্তিনের প্রায় আড়াই লাখ মানুষ হতাহতের মর্মান্তিক ঘটনায় দাগ কেটেছে গোটা বিশ্ববাসীর হৃদয়ে। এবার তারই যেন প্রতিশোধ নিয়েছে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দেয়া বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। নেতানিয়াহুকে মঞ্চে দেখে ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিয়ে প্রতিবাদের অংশ হিসাবে সভাকক্ষ থেকে বেরিয়ে যান তারা।
এ সময়, চোখেমুখে অপমানিত হওয়ার প্রতিচ্ছবি দেখা গেলেও নূনমত অপরাধ বোধ করেননি ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী। কারণ, ওই পরিস্থিতিতে, মানচিত্র হাতে নিয়ে যেকোনো মূল্যে ইরান, হামাস এবং হিজবুল্লাহকে ধ্বংসের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
নেতানিয়াহুর বিশ্বমঞ্চের এ অপমান ঘিরে স্বস্তি প্রকাশ করেছে বিশ্ববাসী। এদিকে, প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের কূটনীতিকও। ভাইরাল হওয়া অধিবেশন চলাকালীন একটি ছবিতে বাংলাদেশের আসনটিও ফাঁকা দেখা গেছে।
গাজায় গণহত্যা চালানো এবং মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশে হামলার প্রতিবাদেই এই ওয়াকআউট। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দ্য টাইমস অব ইসরাইল ও মিডল ইস্ট আই।
নেতানিয়াহু সমর্থকেরা দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন। তবে প্রধানমন্ত্রী যখন মঞ্চে প্রবেশ করেন, তখন বহু কূটনীতিকরা দ্রুত আসন ছেড়ে বেরিয়ে যান। এতে সভাকক্ষের বেরোনোর পথে রিতিমত ভিড় লেগে যায়। এ সময় মার্কিন প্রতিনিধি দল করতালির মাধ্যমে নেতানিয়াহুকে সমর্থন জানালেও ব্রাজিলের প্রতিনিধিরা ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি কেফিয়াহ পরে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘে পাঠানো একাধিক চিঠিতে বিশ্বনেতাদের নেতানিয়াহুর ভাষণ বর্জনের আহ্বান জানান। তারা ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধী অভিযোগও তুলেছেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য নেতানিয়াহুকেই দায়ী করেছেন তারা।
জাতিসংঘের তথ্য বলছে, ইসরাইলের তথাকথিত গণহত্যামূলক অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত দুই লাখ ৩৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত, আহত বা নিখোঁজ হয়েছেন। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া ইসরাইলি সামরিক গোয়েন্দা তথ্যেও দেখা গেছে, এ বছরের মে মাস পর্যন্ত গাজায় নিহতদের ৮০ শতাংশের বেশি ছিলেন সাধারণ নাগরিক।
ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার প্রায় সব আবাসিক এলাকা, বিদ্যালয় ও হাসপাতাল। যুদ্ধের কারণে প্রায় পুরো জনগোষ্ঠী অন্তত একবার হলেও গৃহহীন হয়েছে।
আরও পড়ুন:








