মঙ্গলবার

১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১ পৌষ, ১৪৩২

রাজনীতিবিদদের প্রতি ক্ষোভে রাস্তায় নামে নেপালের তরুণরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১১:৫০

শেয়ার

রাজনীতিবিদদের প্রতি ক্ষোভে রাস্তায় নামে নেপালের তরুণরা
ছবি: সংগৃহীত

নেপালের জেনারেশন জেড তরুণেরা মাত্র ৪৮ ঘণ্টার আন্দোলনে সরকার পতনে সফল হয়েছেন। কিন্তু এই বিজয়ের মূল্য ছিল ভয়াবহ।

২৪ বছর বয়সী পরিবেশকর্মী ও আন্দোলনের সংগঠক তনুজা পান্ডে বলেন, আমরা গর্বিত, কিন্তু সেই সঙ্গে বয়ে বেড়াচ্ছি মানসিক আঘাত, অনুশোচনা আর রাগ।

গত সপ্তাহের বিক্ষোভে ৭২ জন নিহত হন, যা সাম্প্রতিক দশকগুলোর মধ্যে হিমালয়ের দেশটিতে সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ। রাষ্ট্রীয় ভবন, রাজনৈতিক নেতাদের বাড়ি, এমনকি জুলাইতে চালু হওয়া হিলটন হোটেল পর্যন্ত আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়। এক সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।

আন্তর্জাতিক সংকট বিশ্লেষণ সংস্থার জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা আশীষ প্রধান বলেন, এই আন্দোলন ছিল নেপালের বর্তমান রাজনৈতিক শ্রেণির প্রতি পূর্ণাঙ্গ অসন্তোষ—দশকের পর দশক ধরে দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার এর বিরুদ্ধে। তবে তিনি সতর্ক করেন, সরকারি সেবায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা হয়তো ২০১৫ সালের ভূমিকম্পের ক্ষতির সমতুল্য।

রাজধানী কাঠমাণ্ডু ছাড়িয়ে অন্তত ৩০০টির বেশি স্থানীয় সরকারি অফিসে হামলা হয়েছে।

কাঠমাণ্ডু পোস্ট জানায়, দেশের মোট ক্ষতি প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন নেপালি রুপি (২১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার), যা দেশটির মোট জিডিপির প্রায় অর্ধেক।

প্রতিবাদ শুরুর দুই দিন আগে তনুজা পান্ডে চুরে পাহাড় অঞ্চলের এক খনির ভিডিও পোস্ট করেন। লেখেন, দেশের সম্পদ রাজনীতিবিদদের প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির নয়, জনগণের। ভিডিওটি ভাইরাল হয় এবং তিনি আহ্বান জানান, দুর্নীতি ও সম্পদের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামার।

নেপালের এই আন্দোলন ছিল নেতাহীন, অনেকটা অন্য এশীয় তরুণদের আন্দোলনের মতো। সরকার যখন ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করে (স্থানীয়ভাবে নিবন্ধন না করায়), তখন ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়।

এর সঙ্গে যুক্ত হয় নেপো বেবি বিতর্ক। অর্থাৎ রাজনৈতিক পরিবারের সন্তানদের অপ্রকাশিত সম্পদের বিলাসী প্রদর্শন ঘৃণা উসকে দেয়।

তনুজা পান্ডে ও তার বন্ধুরা কাঠমাণ্ডুর মৈতিঘর মণ্ডলা চত্বরে বিক্ষোভে যোগ দেন। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ গান, স্লোগান, আড্ডা দিয়ে শুরু হয়।

২৬ বছর বয়সী আকৃতি ঘিমিরে বলেন, শুরুতে পরিবেশ ছিল একেবারে উৎসবমুখর।

কিন্তু দুপুর নাগাদ নতুন বনেশ্বরের দিকে জনতা অগ্রসর হলে উত্তেজনা বাড়ে। সেখানে পার্লামেন্ট ভবন অবস্থিত। তনুজা ও আকৃতি জানান, তারা দেখেছেন বয়সে বড় কিছু লোক মোটরসাইকেলে এসে জটলা করছে। অনেকেই মুখোশ পরে ছিল।



banner close
banner close