মঙ্গলবার

১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১ পৌষ, ১৪৩২

অপারেশন সিঁদুর নিয়ে মোদীকে সংসদে তুলোধনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩০ জুলাই, ২০২৫ ১০:১৪

আপডেট: ৩০ জুলাই, ২০২৫ ১০:৪৪

শেয়ার

অপারেশন সিঁদুর নিয়ে মোদীকে সংসদে তুলোধনা
ছবি: কোলাজ

ভারতের সংসদেঅপারেশন সিঁদুরইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সায়নী ঘোষ। লোকসভায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, "দেশপ্রেম দেখানো হলে প্রশংসা হয়, কিন্তু প্রশ্ন করা হলে আমাদের দেশদ্রোহী বলা হয়এটা হতে পারে না। আমরা বিরোধী দল হিসেবে প্রশ্ন করব, উত্তর আপনাদের দিতেই হবে।"

সায়নী ঘোষ বলেন, “২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ে পাকিস্তান-প্রশ্রুত জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহ ভারতীয় নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বাংলারও কয়েকজন। তাঁদের পরিবারের চোখের জল আজও শুকায়নি। এই হামলার জবাবে অপারেশন সিঁদুর চালানো হয়। দেশ একজোট হয়ে সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়ায়। কিন্তু সরকার কী করেছে? সেনার কৃতিত্বকে নিজেদের রাজনৈতিক প্রচারে ব্যবহার করেছে।

তিনি অভিযোগ করেন, “শুরুতে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল যুদ্ধের মতো, কিন্তু শেষে সবই বন্ধ হয়ে গেল মার্কিন হস্তক্ষেপে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একাধিকবার দাবি করেছেনতিনিই যুদ্ধ থামিয়েছেন। তাহলে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর শক্তি কোথায় গেল?”

তিনি আরও বলেন, “আপনারা বলছেন দেশপ্রেম মানে শুধু সরকারের প্রশংসা। কিন্তু আমরা বলছি, প্রকৃত দেশপ্রেমিক সেই, যে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে। প্রশ্ন করলে যদি আমাদের দেশদ্রোহী বলা হয়, তাহলে সংসদের দরকার কী?”

সায়নী বলেন, “আপনারা বলছেন, ‘ঘরে ঢুকে মারা হয়েছে’, কিন্তু আমরা জানতে চাই, জঙ্গিরা ঢুকল কীভাবে? গোয়েন্দা ব্যর্থতা কেন হল? এত বড় হামলার পরও নিরাপত্তার দুর্বলতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলা যাচ্ছে নাএটা কী ধরনের গণতন্ত্র?”

বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, “আমরা গর্ব করি আমাদের সেনাবাহিনীর ওপর, আমাদের মেয়েরা আজ সেনার অংশকর্নেল সোফিয়া কুরেশি, উইং কমান্ডার ভূমিকা সিংহের মতো। কিন্তু সেই একই সময় আমাদের প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সফরে ব্যস্ত ছিলেন, পাহেলগাঁও হামলার পরে পর্যন্ত তিনি নীরব ছিলেন।

সায়নী অভিযোগ করেন, “বাংলাকে বারবার অবজ্ঞা করা হয়েছে। অথচ আমাদের পূর্বসূরিরা স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছেন, ‘বন্দে মাতরমএই বাংলার মাটিতেই যুদ্ধের স্লোগান হয়ে উঠেছিল। সেই বাংলাকে আজ অপমান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, “যদি সীমান্তে জঙ্গিরা প্রবেশ করে তাহলে দায় কেন্দ্রীয় সরকারের, সীমান্তে সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব তাদেরই। আর যখন আমরা বলি, জবাব দিন, তখন বলা হয় আমরা পাকিস্তানের ভাষায় বলছি। এটা ন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়ার মতো।

বক্তব্যের শেষে সায়নী বলেন, “আমরা চাই একজন সন্ত্রাসবাদীকেও যেন বেঁচে থাকতে না দেওয়া হয়, যে ভবিষ্যতে ভারতীয় নারীদের সিঁদুর মুছে দিতে পারে। সেটা সে জঙ্গি হোক, পাকিস্তান হোক, অথবা পাকিস্তানকে অক্সিজেন জোগানো চীন হোক। ভারতকে স্পষ্ট বার্তা দিতে হবেআমরা শান্তি চাই, কিন্তু অন্যায় মেনে নয়। যুদ্ধ যদি অনিবার্য হয়, তবে যুদ্ধই হোক।

তার এই বক্তব্য সংসদে তীব্র আলোড়ন তোলে। বিজেপির অনেক সাংসদ তীব্র আপত্তি জানালেও, বিরোধীদের মধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছে সায়নীর এই বক্তব্য।

ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/ruhw5R-Ar6A?si=WYhlbwpo7ngQFICO



banner close
banner close