যুক্তরাজ্যের একটি সামরিক ঘাঁটিতে গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র সরিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র—এমন তথ্য উঠে এসেছে সম্প্রতি ফাঁস হওয়া গোপন নথিতে। লেবাননের বৈরুতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল মায়াদিন জানায়, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণবিষয়ক পর্যবেক্ষণ সংস্থা নিউকওয়াচ ইউকে-এর তথ্যের ভিত্তিতে এ তথ্য প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ অনুসন্ধানী মাধ্যম ডিক্লাসিফাইড ইউকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের একটি সি-১৭ গ্লোবমাস্টার পরিবহন বিমান গত ১৭ জুলাই যুক্তরাজ্যের সাফোক কাউন্টির আরএএফ লেকেনহিথ ঘাঁটিতে অবতরণ করে। এতে করে ২০টি উন্নত বি৬১-১২ মডেলের পারমাণবিক বোমা গোপনে স্থানান্তর করা হয়। প্রতিটি বোমার ধ্বংসক্ষমতা হিরোশিমায় ব্যবহৃত বোমার তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি বলে দাবি করা হয়।
জানা যায়, বিমানটি ১৫ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের লুইস-ম্যাকচোর্ড ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে নিউ মেক্সিকোর কির্টল্যান্ড বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। কির্টল্যান্ড ঘাঁটিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম পারমাণবিক সংরক্ষণাগার ও রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। সেখান থেকে কড়া নিরাপত্তা বলয়ে বিপজ্জনক সামগ্রী তোলার পর বিমানটি রাতের বেলা আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে লেকেনহিথে পৌঁছায়। পথিমধ্যে দুটি কেসি-৪৬ ট্যাঙ্কার বিমান থেকে জ্বালানি গ্রহণ করা হয়।
লেকেনহিথে পৌঁছানোর পর বিমানটিকে ‘ভিক্টর র্যাম্প’ নামে পরিচিত ঝুঁকিপূর্ণ মাল হ্যান্ডলিং এলাকায় স্থাপন করা হয়। ঘাঁটিকে ঘিরে রাখা হয় মার্কিন সামরিক বাহিনী, গোপন এজেন্ট ও ফায়ার টিম। পরে অত্যাধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে বোমাগুলো ঘাঁটির নিরাপদ শেল্টারে সরিয়ে নেওয়া হয়।
ডিক্লাসিফাইড ইউকের দাবি, এসব পারমাণবিক অস্ত্র যুক্তরাজ্যে রাখলেও সেগুলোর উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের—বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্টের হাতে। প্রয়োজনে ব্রিটেনের অনুমতি ছাড়াই এসব অস্ত্র ব্যবহার করা যেতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, এ ঘটনায় ইউরোপে পারমাণবিক উত্তেজনা ও নিরাপত্তা উদ্বেগ আরও বাড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্য সরকার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
আরও পড়ুন:








