লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক একটি জাহাজে হামলা চালিয়েছে অজ্ঞাত সশস্ত্র হামলাকারীরা। রোববার ইয়েমেন উপকূলের কাছাকাছি এই হামলায় অন্তত আটটি ছোট নৌকা থেকে গুলি ও রকেটচালিত গ্রেনেড ছোড়া হয়। ব্রিটেনের সমুদ্র নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ইউকেএমটিও জানিয়েছে, জাহাজে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরাও পাল্টা গুলি চালিয়েছেন এবং ঘটনাস্থলে এখনও গোলাগুলি চলছে।
হামলার দায় এখনো কেউ স্বীকার করেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এর পেছনে ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। হামলার সময় জাহাজটি হোদাইদা বন্দর থেকে ৫১ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। তবে ইউকেএমটিও বা ব্রিটিশ আরেকটি সংস্থা অ্যামব্রে জাহাজটির নাম প্রকাশ করেনি।
চলতি বছরের এপ্রিলের পর এই প্রথম বড় ধরনের হামলার ঘটনা ঘটল লোহিত সাগরে। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ, ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ও যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার জেরে সামগ্রিকভাবে উত্তেজনা বেড়েছে। এরই মধ্যে এই হামলার ঘটনা বিশ্বব্যাপী সমুদ্রপথে নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
২০২৩ সালের নভেম্বরে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর থেকে হুথিরা শতাধিক সামুদ্রিক হামলা চালিয়েছে। গোষ্ঠীটি বলছে, ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে এসব হামলা করছে তারা। ইতোমধ্যে দুটি জাহাজ ডুবিয়ে দেওয়া, একটি পশ্চিমা জাহাজ ছিনতাই এবং অন্তত চারজন নাবিক হত্যার অভিযোগ রয়েছে হুথিদের বিরুদ্ধে।
এই হামলাগুলোতে বৈশ্বিক বাণিজ্যিক রুট ব্যাহত হওয়ায় অনেক কোম্পানি বিকল্প রুটে পণ্য পরিবহন শুরু করেছে, ফলে পরিবহন ব্যয়ও বেড়েছে। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র হুথিদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা বাড়িয়েছে।
তবে গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, হুথিদের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর পর তারা বিমান হামলা বন্ধ করছে। চুক্তিতে বলা হয়েছিল, উভয় পক্ষই একে অপরকে আক্রমণ করবে না এবং লোহিত সাগর বা বাব আল-মান্দাব প্রণালীতেও কোনো হামলা হবে না। ওমান তখন এই সমঝোতার মধ্যস্থতাকারী ছিল।
তবে গত জুনে হুথিরা হুঁশিয়ারি দেয়, যদি ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেয়, তবে তারা মার্কিন জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানাবে। সম্প্রতি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর সেই হুমকি কার্যকর করা হতে পারে—এমন শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স
আরও পড়ুন:








