মঙ্গলবার

১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০ পৌষ, ১৪৩২

রাজীব গান্ধী কেন এলটিটিই’র নিশানায় ছিলেন

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ৬ জুলাই, ২০২৫ ২০:৫৪

আপডেট: ৬ জুলাই, ২০২৫ ২১:০৩

শেয়ার

রাজীব গান্ধী কেন এলটিটিই’র নিশানায় ছিলেন
ছবি সংগৃহীত

১৯৯১ সালের ২১ মে ভারতের তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুমবুদুরে এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত হন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। ভয়াবহ ওই হামলার পেছনে ছিল শ্রীলঙ্কার বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলাম (এলটিটিই)। প্রশ্ন ওঠে—রাজনীতির মঞ্চ থেকে অনেকটা সরে দাঁড়ানো একজন নেতা কেন এলটিটিই’র টার্গেটে পরিণত হলেন?

এর পেছনে যেতে হয় চার বছর আগে, ১৯৮৭ সালে। তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন রাজীব গান্ধী। ওই বছর তিনি শ্রীলঙ্কার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেআর জয়বর্ধনের সঙ্গে ইন্দো-শ্রীলঙ্কা শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করেন। এ চুক্তির মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে তামিলদের স্বায়ত্তশাসনের পথ তৈরি করার চেষ্টা হয় এবং বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর কাছ থেকে অস্ত্র জমা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, ভারত পাঠায় ‘ইন্ডিয়ান পিস কিপিং ফোর্স’ বা আইপিকেএফ নামের শান্তিরক্ষী বাহিনী। উদ্দেশ্য ছিল শান্তি প্রতিষ্ঠা। কিন্তু এলটিটিই এই চুক্তিকে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখে। সংগঠনটির নেতা ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ তাৎক্ষণিকভাবে চুক্তির বিরোধিতা করেন এবং আইপিকেএফের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।

১৯৯০ সালে ভারত আইপিকেএফ প্রত্যাহার করে নিলেও এলটিটিই’র ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। সংগঠনটি মনে করত, তাদের অস্ত্র জমা দেওয়ার চাপ এবং সামরিক অভিযান চালানোর জন্য সরাসরি রাজীব গান্ধী দায়ী। ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে কংগ্রেসের ইশতেহারে শান্তিচুক্তির প্রতি আবারও সমর্থন জানানো হয়। এতে এলটিটিই’র সন্দেহ ও প্রতিশোধস্পৃহা আরও বেড়ে যায়।

পরিণতিতে ‘অপারেশন বিয়ে’ নামে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয় রাজীব গান্ধীকে। হামলাকারী ছিলেন ধানু নামের এক তরুণী, যিনি এলটিটিই’র আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্য ছিলেন।

এই হত্যাকাণ্ড কেবল একজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে হারানোর ঘটনাই নয়; বরং ভারত-শ্রীলঙ্কা সম্পর্ক, দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতি ও সন্ত্রাসবিরোধী কৌশলে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছিল। বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলার পর ভারতীয় রাষ্ট্র এলটিটিইর প্রতি কঠোর অবস্থান নেয়, যা ২০০৯ সালে সংগঠনটির পতনে বড় ভূমিকা রাখে।



banner close
banner close