গাজা উপত্যকা থেকে সব জিম্মির মুক্তির দাবিতে শনিবার (৫ জুলাই) ইসরায়েলের তেলআবিবে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। হাজারো ইসরায়েলি নাগরিক এই বিক্ষোভে অংশ নেন। ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভে তারা সরকারের কাছে একটি পূর্ণাঙ্গ ও চূড়ান্ত বন্দি বিনিময় চুক্তির দাবি জানান, যাতে জীবিত ও মৃত—সব জিম্মির মুক্তি নিশ্চিত হয়।
ইসরায়েলি দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা এমন একটি ‘সামগ্রিক ও বৈষম্যহীন’ চুক্তি চান, যাতে সবাই সমান গুরুত্ব পায়। তারা বলছেন, হামাসের সঙ্গে আংশিক নয়, পূর্ণাঙ্গ চুক্তিই হতে হবে।
বিক্ষোভে জিম্মিদের স্বজনরাও অংশ নেন। অনেকেই মঞ্চে উঠে বক্তব্য দেন এবং প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি দ্রুত চুক্তিতে পৌঁছানোর আহ্বান জানান। তারা অভিযোগ করেন, সরকার দেরি করছে, যা জিম্মিদের জীবনের জন্য হুমকি হতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েল সরকার ঘোষণা করে, তারা বন্দি বিনিময় ইস্যুতে আলোচনার জন্য কাতারের রাজধানী দোহায় একটি প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছে। হামাসের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।
ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থা জানায়, মধ্যস্থতাকারীরা মনে করছেন, উভয় পক্ষের মতপার্থক্য কমে আসায় একটি সমঝোতার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেতজ জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু রোববার যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন। সেখানে তার সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
ইসরায়েলি সরকারের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে গাজা উপত্যকায় প্রায় ৫০ জন জিম্মি রয়েছে, যাদের মধ্যে আনুমানিক ২০ জন জীবিত। অন্যদিকে, ইসরায়েলি কারাগারে রয়েছে ১০ হাজার ৪০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি বন্দি।
মানবাধিকার সংস্থা ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, এসব বন্দিদের অনেকেই শারীরিক নির্যাতন, চিকিৎসা অবহেলা ও খাদ্য সংকটে ভুগছেন, যার ফলে কারাবন্দি অবস্থায় অনেকের মৃত্যু হয়েছে।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মহলের যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও গত বছরের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এতে এখন পর্যন্ত ৫৭ হাজার ৩০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
সূত্র: আনাদলু এজেন্সি
আরও পড়ুন:








