মঙ্গলবার

১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০ পৌষ, ১৪৩২

পাকিস্তান কি ইসরায়েলের পরবর্তী টার্গেট? যুদ্ধ শঙ্কায় মধ্যপ্রাচ্য

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ৫ জুলাই, ২০২৫ ২২:৩৭

শেয়ার

পাকিস্তান কি ইসরায়েলের পরবর্তী টার্গেট? যুদ্ধ শঙ্কায় মধ্যপ্রাচ্য
ছবি সংগৃহীত

ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা এখনও প্রশমিত হয়নি। এরই মধ্যে নতুন করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে—ইসরায়েলের সম্ভাব্য পরবর্তী লক্ষ্য হতে পারে পারমাণবিক শক্তিধর মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তান।

বিভিন্ন পশ্চিমা থিংক ট্যাংক ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, গাজা, সিরিয়া, লেবানন, ইয়েমেন এবং সর্বশেষ ইরানের সঙ্গে সংঘাতে জড়ানোর পর এখন পাকিস্তানকে ঘিরে উদ্বেগ বাড়ছে।

মাত্র ২২ হাজার বর্গকিলোমিটারের ছোট্ট দেশ ইসরায়েল। তবে দেশটির সামরিক আগ্রাসন ও আক্রমণাত্মক কূটনীতির জন্য পুরো মধ্যপ্রাচ্যেই অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। নেতানিয়াহু সরকারের যুদ্ধকামিতা এবার পাকিস্তানকেও কেন্দ্র করে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিচ্ছে।

ইসলামিক বোমা নিয়ে বিতর্ক

পাকিস্তানের পারমাণবিক সক্ষমতা নিয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পুরোনো এক বক্তব্য ফের আলোচনায় এসেছে। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো দুটি চরমপন্থী ইসলামি রাষ্ট্রকে পারমাণবিক শক্তি অর্জন থেকে বিরত রাখা—প্রথমটি ইরান, দ্বিতীয়টি পাকিস্তান।”

পশ্চিমা মিডিয়াগুলো দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানকে "ইসলামিক বোমা" হিসেবে উপস্থাপন করে আসছে। অথচ ইসরায়েল, ভারত বা যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে কখনো “ইহুদি বোমা” বা “খ্রিস্টান বোমা” বলা হয় না—এ নিয়ে সমালোচনাও রয়েছে।

নিরাপত্তা হুমকি ও আন্তর্জাতিক চাপ

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক চিফ অব স্টাফ অ্যাডমিরাল মাইক মুলেনও পাকিস্তানকে ‘বিশ্বের জন্য বড় হুমকি’ বলে চিহ্নিত করেছেন। থিংক ট্যাংক, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, রাজনৈতিক অস্থিরতা, পারমাণবিক অস্ত্রের নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক মহলে আরও কোণঠাসা করে ফেলছে।

‘ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশন’-এর ‘The Agonizing Problem of Pakistan’s Nukes’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবস্থাপনা নিয়ে স্পষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

ভারত-ইসরায়েল মিত্রতা ও কৌশলগত চ্যালেঞ্জ

বিশ্লেষকদের মতে, ভারত-ইসরায়েল কৌশলগত মিত্রতা পাকিস্তানের জন্য আরও উদ্বেগজনক। মোদি ও নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে দুই দেশের জাতীয়তাবাদী শাসনব্যবস্থা একযোগে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ড্রোন, সাইবার হামলা কিংবা স্মার্ট অস্ত্র ব্যবহারের দিকে যেতে পারে।

পরিচিত ছকেই কি এগোচ্ছে আগ্রাসন?

বিশ্লেষকদের মতে, ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া, সুদান কিংবা ইরানে যেভাবে আগে সন্ত্রাসের অভিযোগ, পরে সামরিক হামলা চালানো হয়েছে—এবার পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও সেই কৌশল অনুসরণ করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিকভাবে পাকিস্তানকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ হিসেবে তুলে ধরার প্রচেষ্টা ভবিষ্যতে যৌথ সামরিক পদক্ষেপের কূটনৈতিক ভিত্তি তৈরি করতে পারে।

বিশ্ব রাজনীতি যখন নতুন মেরুকরণ ও সংঘাতের দিকে এগোচ্ছে, তখন দক্ষিণ ও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে নতুন এক যুদ্ধের আশঙ্কা ঘনিয়ে উঠছে। ইরানের পর ইসরায়েলের পরবর্তী লক্ষ্য যদি সত্যিই পাকিস্তান হয়, তবে তা হবে বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য এক গভীর সংকেত।



banner close
banner close