ভারত ড্রোন যুদ্ধে পাকিস্তানকে মোকাবিলার জন্য ২৩৪ মিলিয়ন বা ২৩ কোটি ৪০ লাখ ডলারের ড্রোন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। পাকিস্তানকে মোকাবিলার পাশাপাশি আমদানিকৃত যন্ত্রাংশের ওপরও নির্ভরশীলতা কমাতে চায় তারা। ভারতের ড্রোন শিল্প এখনও চীনা যন্ত্রাংশের ওপর নির্ভরশীল। এই অর্থ মূলত বেসামরিক ও সামরিক ড্রোন নির্মাতাদের জন্য প্রণোদনা হিসেবে ব্যবহার করা হবে। তিনটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মে মাসে পাকিস্তানের সাথে চার দিনের সংঘর্ষের মূল্যায়ন করেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এই সংঘর্ষেই প্রথমবারের মতো দিল্লি ও ইসলামাবাদ মানবহীন বিমান ব্যবহার করে। পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই প্রতিবেশী এখন জড়িয়ে পড়েছে ড্রোন প্রতিযোগিতায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন সরকারি এবং একটি শিল্প সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, দিল্লি তিন বছরের জন্য ২০ বিলিয়ন ভারতীয় রুপি বা ২৩৪ মিলিয়ন ডলারের একটি কর্মসূচি চালু করবে। এই কর্মসূচিতে ড্রোন, যন্ত্রাংশ, সফ্টওয়্যার, কাউন্টার ড্রোন সিস্টেম তৈরি করা হবে। ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে এই বরাদ্দ দেয়া হবে। রয়টার্স এ ব্যাপারে মন্তব্যের জন্য ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে ইমেল করলেও তারা কোনো জবাব দেয়নি।
রয়টার্স এর আগে রিপোর্ট করেছিল, ভারত স্থানীয় শিল্পে ব্যাপক বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে। আগামী ১২ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে ড্রোন শিল্পের সম্প্রসারণে তারা ৪৭০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে পারে। অতীতে, ভারত মূলত তার তৃতীয় বৃহত্তম অস্ত্র সরবরাহকারী ইসরায়েল থেকে সামরিক ড্রোন আমদানি করত। তবে পরে তারা এক্ষেত্রে সক্ষমতা বাড়ায়। যদিও মোটর, সেন্সর ও ইমেজিং সিস্টেমের মতো কিছু উপাদানের জন্য চীনের উপর নির্ভরশীল তারা।
এই প্রণোদনার মাধ্যমে, ভারত ২০২৮ অর্থবছরের শেষ নাগাদ অন্তত ৪০ শতাংশ মূল ড্রোন যন্ত্রাংশ দেশে তৈরি করতে চায়। ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং গত সপ্তাহে বলেছিলেন, ‘ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের সময় উভয় পক্ষেই ড্রোন, যুদ্ধাস্ত্র এবং কামিকাজে ড্রোনের প্রচুর ব্যবহার ছিল। আমরা যে শিক্ষা পেয়েছি তা হল, একটি বৃহৎ, কার্যকর, সামরিক ড্রোন উৎপাদন নিশ্চিত করার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করতে হবে।’
ভারতে ড্রোন আমদানি নিষিদ্ধ কিন্তু এর যন্ত্রাংশ নয়। সরকার দেশের ভেতর থেকে যন্ত্রাংশ সংগ্রহকারী নির্মাতাদের জন্য অতিরিক্ত প্রণোদনার পরিকল্পনা করেছে। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন ব্যাংকও সংস্থাগুলির জন্য কার্যকরী মূলধন, গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য সহজ ঋণ দেবে। প্রণোদনা কর্মসূচির আলোচনায় জড়িত একটি শিল্প সূত্রের অনুমান অনুসারে, বর্তমানে ভারতে ৬০০ টিরও বেশি ড্রোন প্রস্তুতকারী এবং সংশ্লিষ্ট কোম্পানি রয়েছে।
আরও পড়ুন:








