আফগানিস্তানে সন্ত্রাস ছড়াতে ভারত উস্কানি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে পাকিস্তান। তাদের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র শাফকাত আলী খান দাবি করেন, আফগানিস্তানের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সীমান্তবর্তী সন্ত্রাসবাদ এখনো মূল চ্যালেঞ্জ। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভারত আফগানিস্তানের ভূখণ্ডে সক্রিয়ভাবে সন্ত্রাসবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে।
এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ শুক্রবার সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ভারতের পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শত্রুতার একটি নতুন উদ্বেগজনক প্রবণতা। তিনি একে আগ্রাসন অভিহিত করে বলেন, এটি কোনো অবস্থাতেই সহ্য করা যাবে না।
এর আগে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র শাফকাত আলী খান অভিযোগ করেন, আফগানিস্তানের মাটি থেকে সন্ত্রাসবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে ভারত। শুক্রবার এক সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, আফগানিস্তানে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যগুলি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি। ভারতের উত্তরখণ্ডে বিজেপি সরকারের ৫০০ টিরও বেশি মাজার ধ্বংসের নিন্দাও করেন তিনি। যা তার দৃষ্টিতে ক্রমবর্ধমান ইসলামোফোবিয়ার প্রমাণ।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এই ধরনের কথাবার্তা পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা সম্পর্কে ভারতের নিরাপত্তাহীনতা প্রকাশ করে। পাকিস্তানের প্রচলিত বাহিনী দিল্লির স্ব-আরোপিত পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল ছাড়াই ভারতকে নিরস্ত করতে সক্ষম।’
ভারতের সাথে সংলাপে পাকিস্তান মার্কিন মধ্যস্থতা চাইবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, ‘ইসলামাবাদ সংঘাতের চেয়ে কূটনীতি পছন্দ করে। যুদ্ধের পথে হাঁটবে নাকি সংলাপের জন্য পদক্ষেপ নেবে তা ভারতের সিদ্ধান্ত।’
এদিকে আজারবাইজানে ১৭তম অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা বা ইকোর শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী সিন্ধু পানি চুক্তির একতরফা স্থগিতাদেশ, কূটনৈতিক সম্পর্কে অবনতি এবং সীমান্ত বন্ধসহ দিল্লির আগ্রাসী পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানান।
২২শে এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। এর সঙ্গে পাকিস্তান জড়িত বলে অভিযোগ করে ভারত। ইসলামাবাদ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলেও মে মাসের গোড়ার দিকে সঙ্কট চরমে পৌঁছে। চার দিনের সংঘর্ষের পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ১০ মে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। ওই সময় থেকেই দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছে।
ভারতের কর্মকাণ্ডের আঞ্চলিক প্রভাব তুলে ধরে পাক প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় সিন্ধু পানি চুক্তির প্রতি দিল্লির অবাধ্যতা এবং স্থায়ী সালিশ আদালতের রায়কে অবজ্ঞা করার সমালোচনা করো দুটি পদক্ষেপকেই অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘কোনো অবস্থাতেই ভারতকে এই বিপজ্জনক পথ অনুসরণ করার অনুমতি দেয়া যাবে না। এটি পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের শামিল হবে।’
ইরানে সম্প্রতি ইসরায়েলি হামলা এবং গাজায় অব্যাহত সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ ইহুদিবাদী দেশটিকে আঞ্চলিক শান্তির জন্য হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেন। বিশ্বব্যাপী সহিংসতা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘আমরা নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে বর্বর কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ, তা সে গাজায় হোক, ভারত-অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীর হোক বা ইরানে।’
আরও পড়ুন:








