জাপানের দক্ষিণাঞ্চলের বিচ্ছিন্ন তোকারা দ্বীপপুঞ্জে গত দুই সপ্তাহে ৯০০টির বেশি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ভূকম্পনের এ লাগাতার ধাক্কায় আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা রাতে ঘুমাতে পারছেন না। যদিও এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ভূমিকম্পের এ প্রবণতা কবে থামবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না জাপানের আবহাওয়া অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের ভূমিকম্প ও সুনামি পর্যবেক্ষণ বিভাগের পরিচালক আয়াতাকা এবিতা জানান, ‘২১ জুন থেকে তোকারা দ্বীপপুঞ্জের সমুদ্র অঞ্চলে ভূমিকম্প তৎপরতা অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে চলছে।’
তিনি আরও জানান, কিয়ুশু দ্বীপে ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্পের পর বৃহস্পতিবার সকাল ৪টা পর্যন্ত ভূমিকম্পের সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়েছে। বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
জাপানি দৈনিক মেইনিচি শিম্বুন বলছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত আগের ১০ দিনে অঞ্চলটিতে ৭৪০টি ভূমিকম্প রেকর্ড হয়েছে। ভূকম্পনের জোর সাত মাত্রার স্কেলে এক বা তার বেশি ছিল। উল্লেখ্য, জাপানে ভূমিকম্পের মাত্রা বোঝাতে এই স্কেল ব্যবহৃত হয়, যেখানে সাত হলো সর্বোচ্চ মাত্রা।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২৩ জুন একদিনেই রেকর্ড করা হয় ১৮৩টি ভূমিকম্প। এরপর ২৮ জুন ৩৪টি, ২৯ জুন ৯৮টি এবং ৩০ জুন ৬২টি ভূমিকম্প নথিভুক্ত হয়েছে।
তোকারা দ্বীপপুঞ্জের সাতটি বাসযোগ্য দ্বীপে মোট বাসিন্দার সংখ্যা প্রায় ৭০০। তোকারা গ্রামের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের ভয়ে অনেকে রাতভর ঘুমাতে পারছেন না। এক বাসিন্দা বলেন, “মনে হয়, গ্রামটি সারাক্ষণ কাঁপছে। ঘুমাতে গেলেই আতঙ্ক ধরে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, তোকারা দ্বীপপুঞ্জের আশপাশের অঞ্চলের অস্বাভাবিক ভূতাত্ত্বিক গঠনের কারণে সাগরতলে টেকটোনিক চাপ দ্রুত জমা হয় এবং তা ভূমিকম্পে রূপ নেয়।
জাপান প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অব ফায়ার’-এর পশ্চিম প্রান্তে, চারটি প্রধান টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। ফলে দেশটি বিশ্বে অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। বছরে দেশটিতে গড়ে দেড় হাজারের বেশি ভূমিকম্প হয়, যা বিশ্বের মোট ভূমিকম্পের প্রায় ১৮ শতাংশ। তবে বেশিরভাগ ভূকম্পই মৃদু এবং ক্ষয়ক্ষতি নির্ভর করে কাঁপুনির গভীরতা ও অবস্থানের ওপর।
আরও পড়ুন:








