যুদ্ধকৌশলে নতুন চমক দেখাল চীন। শত্রুপক্ষকে নিঃশব্দে অচল করে দিতে এবার তারা উদ্ভাবন করেছে ‘ব্ল্যাকআউট বোম্ব’ বা ‘গ্রাফাইট বোম্ব’। চীনের সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সিসিটিভি সম্প্রতি এ অস্ত্র নিয়ে একটি এনিমেটেড ভিডিও প্রকাশ করেছে। এতে দাবি করা হয়েছে, বিস্ফোরণ ছাড়াই একটি শহরের পুরো বিদ্যুৎব্যবস্থাকে অচল করে দিতে সক্ষম এই বোমা।
চীনা সূত্র জানায়, ব্ল্যাকআউট বোম্ব মূলত কার্বন ফিলামেন্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এটি শত্রুপক্ষের হাই-ভোল্টেজ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, ট্রান্সফর্মার ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে শর্ট সার্কিট ঘটিয়ে পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা বিকল করে দিতে পারে।
প্রতিটি বোমা প্রায় ১ লাখ ৬ হাজার বর্গফুট এলাকার বিদ্যুৎ গ্রিড অচল করতে পারে। ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য এ বোমা ক্ষেপণাস্ত্রের মতো কাজ করে এবং এতে থাকে ৪৯০ কেজি বিস্ফোরক। এটি ২৯০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
চীনা সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা গেছে, ভূমি থেকে ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি মাঝ আকাশে গিয়ে ৯০টি সাব-মিউনিশন ছড়িয়ে দেয়, যেগুলো আকাশ থেকে কার্বন ফিলামেন্ট ছড়িয়ে দিয়ে ১০ হাজার বর্গমিটার এলাকায় শর্ট সার্কিট ঘটায়।
এই অস্ত্রের ধারণাটি প্রথম সামনে আনে চায়না এরোস্পেস সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি কর্পোরেশন। যদিও এর পূর্ণ প্রযুক্তিগত বিবরণ এখনও প্রকাশ করা হয়নি, জানা গেছে এটি মূলত শত্রুপক্ষের C4ISR কাঠামো— অর্থাৎ কমান্ড, কন্ট্রোল, কমিউনিকেশন, কম্পিউটার, ইন্টেলিজেন্স, সার্ভেইলেন্স ও রিকনেসান্স— দুর্বল করতে ব্যবহারের জন্য তৈরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কেবল সামরিক নয়, রাজনৈতিক ও কৌশলগত দিক থেকেও এই অস্ত্রের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তাইওয়ান সেন্টার ফর সিকিউরিটি স্টাডিজ-এর তথ্য অনুযায়ী, তাইপের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা মাত্র তিনটি ট্রান্সমিশন চেকপয়েন্টের উপর নির্ভরশীল। ফলে ব্ল্যাকআউট বোম্ব ব্যবহার করে চীন সহজেই তাইপেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দিতে সক্ষম হতে পারে।
আরও পড়ুন:








