মঙ্গলবার

১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১ পৌষ, ১৪৩২

ইউএসএআইডি বন্ধে ট্রাম্পকে একহাত নিলেন ওবামা-বুশ

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ৩ জুলাই, ২০২৫ ১৮:৩৬

আপডেট: ৩ জুলাই, ২০২৫ ১৮:৩৮

শেয়ার

ইউএসএআইডি বন্ধে ট্রাম্পকে একহাত নিলেন ওবামা-বুশ
বারাক ওবামা, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জর্জ ডব্লিউ বুশ। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের ইউএসএআইডি (USAID) বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একযোগে সরব হয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং খ্যাতনামা গায়ক ও মানবাধিকারকর্মী বোনো। ট্রাম্প প্রশাসনের এ পদক্ষেপকে ‘ভয়াবহ ভুল’ এবং ‘জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তারা।

ফক্স নিউজ–এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা ইউএসএআইডি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে। তবে সমালোচকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন,

"বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু মানবিক কার্যক্রম ইউএসএআইডি-এর মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছিল। এটি বন্ধ করা একটি ভয়াবহ ভুল এবং বৈশ্বিক মানবিক প্রচেষ্টার জন্য বড় বিপর্যয়।"

জর্জ ডব্লিউ বুশ বলেন,

"এই সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত এইডস ও এইচআইভি প্রতিরোধ কার্যক্রম ২৫ মিলিয়নের বেশি মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে। এটি ছিল আমাদের জাতীয় স্বার্থে এক গৌরবময় সাফল্য।"

ইউটু ব্যান্ডের গায়ক বোনো মন্তব্য করেন,

"সংস্থাটির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হলেও, এর অনেক কর্মীই ছিলেন মানবিকতার সেরা উদাহরণ। এটি বন্ধ হওয়ায় বিশ্বজুড়ে লাখো মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।"

উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালে প্রেসিডেন্ট জন এফ. কেনেডির সময় ইউএসএআইডি প্রতিষ্ঠিত হয়। সংস্থাটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও দুর্যোগ মোকাবেলায় সহায়তা দিয়ে আসছিল।

ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করেছে, ইউএসএআইডি-তে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা প্রকট। ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (ডিওজিই) সংস্থাটির কার্যক্রম পর্যালোচনা করে অপচয়ের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানায়। সাবেক ডিওজিই প্রধান ইলন মাস্ক একে ‘মার্কসবাদীদের আখড়া’ বলেও উল্লেখ করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতায় এনে ইউএসএআইডি-এর কার্যক্রম পুনর্গঠনের ঘোষণা দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তার ভাষ্য, "সংস্থাটি এনজিও শিল্পের স্বার্থে কাজ করেছে, আমেরিকার নয়। এটি উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্যর্থ ও অস্থিরতা সৃষ্টিকারী।"

কংগ্রেসে এক ভাষণে ট্রাম্প বলেন,

"ডিওজিই ২২ বিলিয়ন ডলারের সরকারি অপচয় শনাক্ত করেছে, যার একটি বড় অংশ ইউএসএআইডি-এর। উদাহরণস্বরূপ, বার্মায় বৈচিত্র্য বৃত্তির জন্য ৪৫ মিলিয়ন ডলার ও ট্রান্সজেন্ডার ইঁদুর গবেষণায় ৮ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে।"

এই সিদ্ধান্তে মার্কিন রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম হয়েছে। সাবেক দুই প্রেসিডেন্টের অভিন্ন অবস্থান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পররাষ্ট্র সহায়তা নীতিকে ঘিরে গভীর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।



banner close
banner close