সম্প্রতি ১২ দিনের সংঘাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে পাঁচ শতাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। এসব ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের খরচ হয়েছে প্রায় দেড়শ কোটি ডলার।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, ইরানের নিক্ষিপ্ত প্রায় ৫৩০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে অধিকাংশই খোলা জায়গায় আঘাত হেনেছে। বাকি ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে প্রায় ২৫৮টি প্রতিহত করার চেষ্টা করে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের যৌথ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। এর মধ্যে সফলভাবে প্রতিহত করা হয় ২২২টি, যা মোট ইন্টারসেপশনের ৮৬ শতাংশ।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ জানিয়েছে, আইডিএফের প্রকাশিত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ইরান মোট ৪২ দফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এসব হামলায় মোট ৫৩০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। ৩৩টি হামলার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হারেৎজ জানায়, ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্রে ছিল শত শত কিলোগ্রাম ওজনের ওয়ারহেড।
তেল আবিব-জাফায় পাঁচটি, হাইফায় চারটি, হার্জলিয়া ও রামাত হাশারনে চারটি, রামাত গানে তিনটি, বের শেভায় তিনটি, পেতাহ টিকভায় দুটি, রেহোভতে দুটি এবং অন্যান্য কয়েকটি শহরেও একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে।
তিনটি ক্ষেপণাস্ত্রে ছিল ক্লাস্টার ওয়ারহেড, যার প্রতিটিতে ছিল কয়েকটি বোম্বলেট। প্রতিটি বোম্বলেটের ওজন ছিল সর্বোচ্চ সাত কিলোগ্রাম। এই ক্লাস্টার ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর আঘাত হানে বীরশেভা, রিশন লেজিয়ন, হলোন, আজোর, স্যাভিয়ন, বাত ইয়াম ও ওর ইয়েহুদা এলাকায়।
এই আকাশ প্রতিরক্ষায় ব্যবহৃত হয়েছে ইসরায়েলের অ্যারো-২, অ্যারো-৩ এবং যুক্তরাষ্ট্রের থাড সিস্টেম। হামলার সময় ও পূর্বে মার্কিন কার্গো বিমানে করে থাড ইন্টারসেপ্টর পাঠানো হয় ইসরায়েলে।
মার্কিন স্যাটেলাইট গবেষক কোরি শের ও জ্যামন ভ্যান ডেন হোয়েক আরও ১০টি অপ্রকাশিত হামলার স্থান শনাক্ত করেছেন। তাদের তথ্য আইডিএফ আংশিকভাবে নিশ্চিত করেছে।
ইরান থেকে ছোড়া আট দফার সালভো ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল মিলে ছুড়েছে ৮৪টি ইন্টারসেপ্টর। এর মধ্যে ৩৪টি অ্যারো-৩, ৯টি অ্যারো-২ এবং ৩৯টি থাড। সমগ্র ১২ দিনের ব্যবধানে আনুমানিক ১৯৫টি ইন্টারসেপ্টর ব্যবহৃত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিটি ইন্টারসেপ্টরের আনুমানিক খরচ ২০ লাখ মার্কিন ডলার। ফলে পুরো অভিযান পরিচালনায় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয় হয়েছে আনুমানিক ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষা কার্যক্রম উল্লেখযোগ্যভাবে সফল হলেও এর ব্যয় অত্যন্ত উচ্চ। ইরানের বড় আকারের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ এবং তার বিপরীতে ইসরায়েলের প্রতিরোধ সামরিl
সক্ষমতার এক নতুন দিক তুলে ধরেছে, তবে তা অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বড় চ্যালেঞ্জও বটে।
এই সংঘাত প্রমাণ করেছে, আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধের যুগে শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতাই নয়, অর্থনৈতিক সক্ষমতাও একটি দেশের প্রতিরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আরও পড়ুন:








