ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে যুদ্ধের শঙ্কা আবার ঘনীভূত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, পারমাণবিক সমঝোতা স্থগিত থাকায় এই অঞ্চলে বড় ধরনের সামরিক সংঘাতের ঝুঁকি বেড়েছে।
ইসরায়েলের সম্ভাব্য আক্রমণ প্রতিহত করতে ইরানের সামরিক বাহিনী পূর্ণ প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সামরিক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুলফজল শেকারচি। তিনি মেহের নিউজকে বলেন, “জায়োনিস্টদের বিশ্বাস করা যায় না। তারা আগ্রাসন চালালে ইরান পাল্টা জবাব দিতে দ্বিধা করবে না।”
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, তার প্রশাসনের হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস হয়ে গেছে। ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “তারা ভাবেওনি যে আমরা এমন হামলা চালাতে পারি। ইসরায়েল আংশিক ক্ষতি করলেও আমরাই পুরো অবকাঠামো ধ্বংস করেছি।” তবে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) জানিয়েছে, ক্ষতি গুরুতর হলেও ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি।
ইরান দাবি করে আসছে, তাদের পরমাণু প্রকল্প শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রমের গতি ও মাত্রা দেখে আন্তর্জাতিক মহলে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির আশঙ্কা প্রবল হয়েছে।
এদিকে ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মাজিদ তাখত-রাভানচি জানিয়েছেন, “যুক্তরাষ্ট্র একাধিক মধ্যস্থতকারীর মাধ্যমে আলোচনায় ফিরতে চাইলেও এখনো স্পষ্ট বার্তা দেয়নি যে তারা আগ্রাসন বন্ধ রাখবে কি না।”
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘আল্লাহর শত্রু’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। অন্যদিকে দেশটির প্রভাবশালী রাজনীতিক আলি শামখানি রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থাকে বলেন, “পরমাণু অবকাঠামো ধ্বংস হলেও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার জ্ঞান আমাদের রয়েছে। এখন আমাদের প্রতিরক্ষা আরও জোরদার করতে হবে।”
পরিস্থিতির এই অবনতি ইঙ্গিত দিচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির পথ অনেক কঠিন এবং দীর্ঘ হতে চলেছে। যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিয়ে উদ্বেগ থাকায় যে কোনো সময় আবার শুরু হতে পারে ভয়াবহ সংঘাত।
আরও পড়ুন:








