বুধবার

১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১ পৌষ, ১৪৩২

সার্কের বিকল্প জোটে চীন-পাকিস্তানের উদ্যোগ, আলোচনায় বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ৩০ জুন, ২০২৫ ১৪:২৫

শেয়ার

সার্কের বিকল্প জোটে চীন-পাকিস্তানের উদ্যোগ, আলোচনায় বাংলাদেশ
প্রতীক ছবি

দক্ষিণ এশিয়ার স্থবির আঞ্চলিক সংগঠন সার্কের (দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা) বিকল্প হিসেবে নতুন আঞ্চলিক জোট গঠনের পরিকল্পনা করছে চীন ও পাকিস্তান। ইতোমধ্যে এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা অনেকটাই এগিয়েছে। আঞ্চলিক সংহতি, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং বাণিজ্যিক যোগাযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সম্প্রতি চীনের কুনমিং শহরে বাংলাদেশ, চীন এবং পাকিস্তানের মধ্যে প্রথমবারের মতো ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে তিন দেশের শীর্ষ পর্যায়ের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশকেও প্রস্তাবিত এই নতুন আঞ্চলিক জোটে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

তবে ভারতের অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। কারণ দেশটির কৌশলগত অবস্থান এবং আঞ্চলিক স্বার্থ এই উদ্যোগের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে মেলে না বলে মনে করা হচ্ছে। তবু ভারতকে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, আফগানিস্তানসহ কয়েকটি দেশের এই জোটে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মূলত সার্কের দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার কারণেই এই বিকল্প চিন্তা সামনে এসেছে।

উল্লেখযোগ্য যে, পাকিস্তান ও ভারতের দ্বন্দ্বের কারণে সার্ক গত এক দশকের বেশি সময় ধরে কার্যত অচল। ২০১৬ সালে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠেয় সার্ক শীর্ষ সম্মেলন বাতিল হয় ভারতের বয়কটের কারণে। বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশ সে সময় ভারতের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে সম্মেলনে যোগ দেয়নি।

পরবর্তীতে সার্ককে সক্রিয় করতে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। বরং কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে ভারত পাক ব্যবসায়ীদের জন্য সার্কভুক্ত দেশ হিসেবে বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল করে, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে।

চীন ও পাকিস্তান মনে করছে, দক্ষিণ এশিয়ায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়াতে একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম জরুরি। তাই সমমনা দেশগুলোর জন্য বিকল্প আঞ্চলিক জোট এখন সময়ের দাবি।

বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের ভূমিকাও এখন অনেকটা দ্বিধান্বিত। বিশেষ করে গত দুটি সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অংশ না নেওয়া এ বিষয়টিকে স্পষ্ট করেছে। এসসিও-তে চীন, রাশিয়া, ইরান, পাকিস্তানসহ মধ্য এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলো রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিকল্প আঞ্চলিক জোট গঠনের এ ধরনের উদ্যোগ নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে। তবে এটি বাস্তবায়নে রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি ও আঞ্চলিক দেশগুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।



banner close
banner close