বুধবার

১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১ পৌষ, ১৪৩২

ইসরাইলের বিরুদ্ধে শক্তির মাত্র ৫ শতাংশ ব্যবহার করেছে ইরান: আইআরজিসি জেনারেল

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৯ জুন, ২০২৫ ১৪:২৯

আপডেট: ২৯ জুন, ২০২৫ ১৪:৩৫

শেয়ার

ইসরাইলের বিরুদ্ধে শক্তির মাত্র ৫ শতাংশ ব্যবহার করেছে ইরান: আইআরজিসি জেনারেল
ছবি সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার রেশ এখনও কাটেনি। এরই মধ্যে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সমন্বয়বিষয়ক উপ-কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ-রেজা নাগদি শনিবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরানের পাল্টা হামলায় দেশের প্রতিরক্ষা শক্তির পাঁচ শতাংশেরও কম বাস্তবিক অর্থে সক্রিয় হয়েছে।

তিনি পরিষ্কার করেন, এখানে সক্রিয় বলতে ব্যবহৃত বা শেষ হয়ে যাওয়ার অর্থ নয়, বরং প্রতিরক্ষা ইউনিটগুলোর মাত্র পাঁচ শতাংশ শত্রুর মোকাবিলায় নিয়োজিত হয়েছিল। তার ভাষায়, তাদের মূল সামরিক সক্ষমতা এখনো অপ্রকাশিত এবং প্রয়োগ করা হয়নি। তাদের পূর্ণ শক্তি এখনো মঞ্চে ওঠেনি।

জেনারেল নাগদি জানান, ইরান যদি সত্যিকারের পূর্ণমাত্রার সামরিক জবাব দেয়, তাহলে তার ব্যাপ্তি এবং ধ্বংসক্ষমতা হবে বহুগুণ বেশি। তিনি বলেন, তারা সজ্জিত এবং প্রস্তুত। চাইলে আরও কয়েক বছর এই গতিতে শত্রুকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় লক্ষ্যবস্তু করতে পারেন। তাদের প্রকৃত শক্তি স্থলবাহিনীতে নিহিত।

গত ১৩ জুন ইসরাইল আকস্মিকভাবে ইরানের ওপর একতরফা হামলা চালালে, ইরান এর পাল্টা জবাবে ব্যাপক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে। ইরানের হামলায় ব্যবহৃত হয় উচ্চগতির হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরণের আধুনিক অস্ত্র। এই হামলায় ইসরাইল অধিকৃত অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক, সামরিক ও শিল্প স্থাপনা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরাইলি সামরিক ঘাঁটিগুলোচ যেখান থেকে মূল হামলা শুরু হয়েছিল তা গুরুতর ক্ষতির মুখে পড়েছে।

এদিকে ইরানের এই পাল্টা আক্রমণ ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রও সরাসরি হস্তক্ষেপ করে। ওয়াশিংটন তাদের টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করে। সাতটি থাড ইউনিটের মধ্যে অন্তত দুটি সরাসরি ব্যবহার করা হয়। মিলিটারি ওয়াচ ম্যাগাজিনের তথ্যমতে, সংঘাতের সময় ৬০ থেকে ৮০টি ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। একটি থাড ইন্টারসেপ্টরের খরচ ১২ থেকে ১৫ মিলিয়ন ডলার। সেই হিসাবে থাড ব্যবহারের মোট খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮১০ মিলিয়ন থেকে ১.২১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে। শুধু ১২ দিনের এই সংঘাতেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ব্যয় ৮০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি হয়েছে।

এদিকে জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের হামলায় ইরানের একাধিক পরমাণু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, ইরান কয়েক মাসের মধ্যেই পুনরায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম শুরু করতে সক্ষম হবে।

সংঘাতের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হুঁশিয়ারি দিয়ে আইআরজিসির মুখপাত্র বলেন, চোখ খুলুন এবং অপ্রাসঙ্গিক ও বিক্ষিপ্ত আচরণ বন্ধ করুন।

তিনি ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্যকে বেহুদা এবং পরাজয়ের হতাশা থেকে জন্ম নেওয়া বলে উল্লেখ করেন। তার ভাষায়, এই ১২ দিনের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের বড় ধরনের সামরিক ব্যর্থতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরান যদি সত্যিকারের পূর্ণমাত্রার সামরিক শক্তি ব্যবহারে করত, তাহলে গোটা অঞ্চলে সংঘাত আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারত ।



banner close
banner close