যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আকস্মিকভাবে কানাডার সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য আলোচনা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন। শুক্রবার এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বার্তায় তিনি জানান, “এই মুহূর্ত থেকে আমরা কানাডার সঙ্গে সকল বাণিজ্য আলোচনা বন্ধ করছি।”
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ হিসেবে উঠে এসেছে কানাডার নতুন ডিজিটাল সার্ভিসেস ট্যাক্স (DST), যা গুগল, অ্যামাজন, অ্যাপলসহ বড় মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর প্রযোজ্য হবে। করহার নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ শতাংশ, যার ফলে বছরে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত বোঝা বহন করতে হতে পারে এসব প্রতিষ্ঠানকে।
যদিও কর আইনটি গত বছরই কার্যকর হয়েছে, তবে প্রথম অর্থপ্রদান শুরু হওয়ার কথা আগামী সোমবার থেকে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে জানানো হবে—কানাডা যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করতে কী পরিমাণ শুল্ক দিতে হবে।
আলোচনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
কানাডা আশা করেছিল, চলমান বাণিজ্য আলোচনার মাধ্যমেই বিষয়টির সমাধান হবে। তবে ট্রাম্পের আকস্মিক ঘোষণায় সেই সম্ভাবনা এখন অনিশ্চয়তার মুখে।
প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা সবসময় কানাডার স্বার্থেই আলোচনা চালিয়ে যাব।” তিনি আরও জানান, ট্রাম্পের ঘোষণার পরও কানাডা আলোচনায় ফিরে আসার পথ খোলা রাখবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্প অতীতেও বহুবার সামাজিক মাধ্যমে হুমকি দিয়ে পরবর্তীতে তা থেকে সরে এসেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যে শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েও শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছিলেন।
চেম্বার ও বিশেষজ্ঞদের প্রতিক্রিয়া
কানাডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের প্রধান নির্বাহী কানডেস লেইং বলেন, “শেষ মুহূর্তের চমক এখন সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা আশাবাদী, আলোচনা আবারও অগ্রসর হবে।”
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা (USMCA) ফ্রি ট্রেড চুক্তি কার্যকর থাকলেও, চলতি বছর ট্রাম্প কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ নতুন শুল্ক আরোপ করেন। তখন তার যুক্তি ছিল, সীমান্তে মাদক পাচার রোধে কড়াকড়ি প্রয়োজন।
গাড়ি, স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের মতো পণ্য একাধিকবার তিনটি দেশের সীমান্ত অতিক্রম করে—ফলে অতিরিক্ত শুল্ক সরবরাহ চেইনের জটিলতা বাড়াবে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
এই পরিস্থিতিতে কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করে। তবে ব্যবসায়িক চাপে কিছুক্ষেত্রে ট্রাম্প শুল্ক থেকে ছাড়ও দিয়েছেন।
শেয়ারবাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
ঘোষণার পর ওয়াল স্ট্রিটে শেয়ারের দাম কিছুটা পড়ে গেলেও, বাজারে পরে আস্থা ফিরে আসে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছায় দিনের শেষ ভাগে।
সূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা, সিএনএন
আরও পড়ুন:








