বৃহস্পতিবার

১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩ পৌষ, ১৪৩২

ইরানের পর গাজায় যুদ্ধ বিরতির সম্ভাবনা

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৬ জুন, ২০২৫ ১১:৩৩

শেয়ার

ইরানের পর গাজায় যুদ্ধ বিরতির সম্ভাবনা
ছবি: সংগৃহীত

গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি হামলা এবং সহিংসতায় প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭৯ জন নিহত এবং প্রায় ৪০০ জন আহত হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খাদ্যের অভাবে প্রাণ যাচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধদের । ত্রাণ সংগ্রহের সময়ও গুলি করে মারা হচ্ছে গাজার বাসিন্দাদের। এদিকে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজায় যুদ্ধবিরতির দিকে নজর দিচ্ছে আন্তর্জাতিক বিশ্ব।

এছাড়াও ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে রামাল্লাহর উত্তর-পূর্বে কফর মালেক গ্রামে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় অন্তত তিনজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। গত সোমবার বিকেলে পশ্চিম তীরের কফর মালেক গ্রামের বাইপাস সড়ক দিয়ে বন্ধুর সাথে হাটার সময় ইসরায়েলই বাহিনীর গুলিতে ১৩ বছর বয়সী এক শিশু নিহত হয়েছে। শিশুটির পিঠে গুলি লেগে গলা দিয়ে বের হয়। এ সময় তাঁর পরিবার ও প্রতিবেশিরা ছুটে আসলে তাদের উপরও হামলা চালানো হয় ।

এর আগে ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার দক্ষিণাঞ্চলে লড়াই চলাকালে সাত ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। বোমার আঘাতে একটি ইসরায়েলি সাঁজোয়া যানে আগুন ধরে গেলে ভেতরে থাকা সেনারা নিহত হন। মঙ্গলবারের এ ঘটনায় এক ইসরায়েলি সেনা গুরুতর আহত হয়েছেন বলে রয়টার্স জানিয়েছে। বুধবার এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী জানায়, নিহত সেনাদের মধ্যে একজন কর্মকর্তা ও বাকি ছয়জন সৈন্য। নিহতদের সবার বয়স ১৯ থেকে ২১ বছরের মধ্যে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, চলমান ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় মোট ৫৬ হাজার ১৫৬ জন নিহত এবং ১ লাখ ৩২ হাজার ২৩৯ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে ৭ অক্টোবর হামলায় ইসরায়েলে অন্তত ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয়। মানবিক বিপর্যয় ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে।

এদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দ্রুত স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ন্যাটো সম্মেলনে বলেছেন, গাজায় বিরাট অগ্রগতি হচ্ছে। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসও যুদ্ধবিরতির প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে। তাছাড়া ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ট্রাম্পকে এক চিঠিতে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ করেছেন।

ট্রাম্প বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘাতের অবসান ঘটাতে অসাধারণ অগ্রগতি হচ্ছে। ইরানে হামলার ঘটনায় গাজায়ও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে তিনি মনে করেন। আলজাজিরা জানায়, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ট্রাম্পের কাছে একটি চিঠি লেখেন। তাতে তিনি ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার জন্য ট্রাম্পের প্রশংসা করেছেন।

ফিলিস্তিনিদের জন্য স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনতে আরেকটি চুক্তিতে কাজ করার জন্য ট্রাম্পকে প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। ওই চিঠিতে মাহমুদ আব্বাস বলেন, ইসরায়েলি দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতে একটি বিস্তৃত শান্তিচুক্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য আরব দেশের সঙ্গে সহযোগিতা করতে তিনি প্রস্তুত।

হামাস জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে আলোচনার প্রত্যাশা গত কয়েক ঘণ্টায় বেড়েছে। সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তাহের আল-নুনু এএফপিকে বলেন, ‘মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ থেমে যায়নি বরং গত কয়েক ঘণ্টায় তা বেড়েছে। তবে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে নতুন কোনো প্রস্তাব পায়নি হামাস।’



banner close
banner close