বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার প্রতিশোধ হিসেবে কাতারে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে তেহরান। সোমবার কাতারের আল উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর এখনো পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বিশ্লেষকরা মনে করেন, তুলনামূলকভাবে সীমিত এই ইরানি প্রতিক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সাথে উত্তেজনা কমানোর ইচ্ছার ইঙ্গিত দেয়। তবে অনেক দেশ এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
ট্রুথ সোশ্যাল সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে করা এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লেখেন, ‘ইরান তাদের পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংসের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে খুবই দুর্বল প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। আমরা খুব কার্যকরভাবে এটি প্রতিহত করেছি। ১৪টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে ১৩টি ভূপাতিত করা হয়েছে। একটি হুমকি নেই এমন দিকে যাচ্ছিল। আমি আনন্দের সাথে জানাচ্ছি, কোনো আমেরিকানের ক্ষতি হয়নি। অন্যান্য ক্ষতি হয়েছে খুবই সামান্য। আমি ইরানকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, আমাদের আগেভাগে জানানোর জন্য। সম্ভবত ইরান এখন এই অঞ্চলে শান্তি ও সম্প্রীতির দিকে এগিয়ে যেতে পারে। আমি ইসরায়েলকেও উৎসাহিত করবো।’
এক্স-এ করা এক পোস্টে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি লিখেছেন: ‘আমরা কারও ক্ষতি করিনি। তবে আমরা কোনো পরিস্থিতিতে হয়রানি মেনে নেব না। নতি স্বীকার করবো না, এটাই ইরানের যুক্তি।‘
কাতারের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সরকারি মুখপাত্র ড. মাজেদ বিন মোহাম্মদ আল আনসারি ইরানি বিপ্লবী গার্ডের আল-উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে হামলার তীব্র নিন্দা জানান। এর পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার আছে বলেও কাতারের পক্ষে থেকে দাবি করা হয়েছে।
অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করে এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব, বাহরাইন, কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এই হামলা ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বলে মনে করে তারা। একই সঙ্গে কাতারের প্রতি সব ধরনের সমর্থনের কথাও বলেছে তারা।
এদিকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখো এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ফ্রান্স কাতারের সঙ্গে সংহতি জানাচ্ছে। আমি দেশটির কর্তৃপক্ষ এবং এই অঞ্চলে আমাদের অংশীদারদের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছি। আমি সব পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন, উত্তেজনা হ্রাস এবং আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। এই বিশৃঙ্খলার অবসান হওয়া উচিত।’
তবে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সোমবার বলেন, ‘ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে মার্কিন হামলা বিশ্বের কাছে ভুল সংকেত পাঠিয়েছে এবং একটি খারাপ নজির স্থাপন করেছে। সংঘাতের সব পক্ষের উচিত পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য ব্যবস্থা নেয়া এবং সংলাপে ফিরে আসা।’
তিনি আরও বলেন, ‘সব পক্ষকেই শক্তি প্রয়োগের প্রবণতা সংযত করতে হবে। সংঘাতকে আরও বাড়িয়ে তোলা এবং আগুনে ঘি ঢালার প্রবণতাও এড়িয়ে চলতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইরান আহত হয়েছে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাসযোগ্যতাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
আরও পড়ুন:








