
ফিলিস্তিনে চলমান মানবিক বিপর্যয় এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনের অভিযোগকে ঘিরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। ওই প্রস্তাবে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে বাধ্য করতে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এই প্রস্তাবটি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান ও মানবাধিকারের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের অঙ্গীকার নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেয়।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। গাজা ও পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর যে ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটছে, তার প্রেক্ষিতেই এই প্রস্তাব পেশ করা হয়। প্রস্তাবটির মূল লক্ষ্য ছিল—ইসরায়েলের কার্যকলাপের জন্য আন্তর্জাতিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা এবং সাধারণ ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তা রক্ষা করা।
প্রস্তাবের পক্ষে ১৪৯টি দেশ ভোট দেয়, বিপক্ষে ভোট পড়ে ১২টি দেশের এবং ১৯টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। প্রস্তাবটি স্পেনসহ ৩০টির বেশি দেশ উত্থাপন করে। ভোটের আগে স্পেনের জাতিসংঘ প্রতিনিধি হেক্টর গোমেজ হার্নান্দেজ বলেন, “গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এখনই একটি শক্ত বার্তা দিতে হবে।” এই প্রস্তাব গাজা ও পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণ, ঘরবাড়ি ধ্বংস, জোরপূর্বক উচ্ছেদ, জমি দখল এবং বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানায়।
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের স্থায়ী পর্যবেক্ষক রিয়াদ মানসুর বলেন, “এই প্রস্তাব ভাষাগত দিক থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী।” তিনি যোগ করেন, “ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ প্রস্তাবকে অবজ্ঞা করে এসেছে। এখন সময় এসেছে এই ভাষাকে বাস্তব পদক্ষেপে রূপান্তর করার।” প্রস্তাবে যুদ্ধের কৌশল হিসেবে জনগণকে অনাহারে রাখার কৌশলের নিন্দা জানানো হয়েছে এবং মানবিক সহায়তা আটকে দেওয়াকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলে এটি একপাক্ষিক এবং হামাসকে নিরস্ত্র করার কথা না বলায় এতে ভারসাম্য নেই। মার্কিন প্রতিনিধি ডরোথি শিয়া বলেন, “এই প্রস্তাব গাজায় শান্তি আনার ক্ষেত্রে কিছুই করবে না এবং এটি সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকেও দুর্বল করে।” তবুও, প্রস্তাবটি জাতিসংঘে গৃহীত হওয়ায় এটা স্পষ্ট—বিশ্ব সম্প্রদায় ফিলিস্তিন সংকটে নিরব থাকছে না। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি
আরও পড়ুন: