শনিবার

১৪ জুন, ২০২৫
৩১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
১৮ , ১৪৪৬

কাশ্মীর ইস্যুতে আবারও মধ্যস্থতার প্রস্তাব ট্রাম্পের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩ জুন, ২০২৫ ০৯:১৯

শেয়ার

কাশ্মীর ইস্যুতে আবারও মধ্যস্থতার প্রস্তাব ট্রাম্পের
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার আবারও পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে কাশ্মীর সংকট নিরসনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন। এর মাত্র একদিন আগে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একই ধরনের মন্তব্য করে।

এর আগে গত মাসে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র সামরিক সংঘাতের পর দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করার পর ট্রাম্প কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। শান্তি অর্জনের জন্য দেশটির নেতাদের প্রশংসা করে এক বার্তায় তিনি মন্তব্য করেছিলেন, আমি আপনাদের উভয়ের সাথে কাজ করব, দেখতে হবে, হাজার বছর পর কাশ্মীরের বিষয়ে কোনও সমাধানে পৌঁছানো যায় কিনা।”

ট্রাম্পের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে আমেরিকা কী পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে সে সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে, পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস উল্লেখ করেছেন, ‘ট্রাম্পই একমাত্র ব্যক্তি যিনি এমন কিছু মানুষকে আলোচনার টেবিলে এনেছেন যা আগে কেউ ভাবতেও পারেনি। তিনি আশাবাদী, কাশ্মীর সমস্যাও সমাধান হতে পারে।

বৃহস্পতিবার একটি বিল স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ করেছেন। তিনি আরো বলেন, ‘ তারা পারমাণবিক যুদ্ধে যেতে যাচ্ছিল এবং আমি তা বন্ধ করেছি। আমি দুনেতাকে ফোন করেছি এবং কথা বলেছি, বাণিজ্যের কথা বলেছি। আমি বলেছিলাম, যুদ্ধে গেলে আমাদের সাথে বাণিজ্য হবে না। তারা দুজনেই বিষয়টি বুঝতে পেরেছিলেন। তারা যুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছেন। আমি ফোন কল এবং বাণিজ্যের মাধ্যমে সেই যুদ্ধ বন্ধ করেছি।

তিনি আরও বলেন, ‘ভারত ওয়াশিংটনে একটি বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে এবং একটি পাকিস্তানি প্রতিনিধিদল আমার মনে হয় আগামী সপ্তাহে আসবে।‘ অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা তাদের একত্রিত করব। আমি জানি, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে। আমি তাদের বলেছিলাম, আমি যে কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারি। আমি তোমাদের মধ্যস্থতাকারী হব।‘

ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের পহেলগামে ২২এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। এই হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করে ভারত পাকিস্তানের হামলা চালায়। পাকিস্তানও পাল্টা জবাব দেয়। চারদিন পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এই যুদ্ধ বন্ধ হয়।

এদিকে পাকিস্তানের কূটনৈতিক মিশনের প্রধান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির পর এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ সফরের সময়, ভারত ট্রাম্পকে কাশ্মীরের বিষয়ে তার অবস্থান থেকে সরানোর চেষ্টা করেছে। তবে তারা সফল হতে পারেনি।

বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে এগমন্ট রয়েল ইনস্টিটিউটে ভাষণ দেওয়ার পর সংবাদমাধ্যমকে বিলাওয়াল পানি নিয়ে ভারতীয় আগ্রাসন তুলে ধরেন। ‘তিনি আরও বলেন, ‘আমরাইউরোপ ভ্রমণ সম্পন্ন করেছি যেখানে আমরা পাকিস্তানের শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সংসদ সদস্য এবং থিঙ্ক ট্যাঙ্কদের সাথে আলোচনা করেছি। ভারত যদি সিন্ধু পানি যুক্তি স্থগিতই রাখে তাহলে পাকিস্তান একে যুদ্ধ ঘোষণা সামিল হিসেবেই। এবং তারা পাল্টা আঘাত করবে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তান বিশ্ব মঞ্চে কাশ্মীর এবং সিন্ধু নদীর পানির সমস্যা উত্থাপন করেছে। ‘সন্ত্রাসবাদের অজুহাতে ভারত পাকিস্তানের উপর আক্রমণ করছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাশ্মীর ও সিন্ধু পানি উভয় বিষয়ই উত্থাপন করেছি এবং অত্যন্ত ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি।

যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ থেকে চমৎকার সাড়া পাওয়া গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি একটি বড় জয়। ‘ভারত এই বিষয়গুলিতে ট্রাম্পের অবস্থানকে ক্রমাগত প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু ট্রাম্প দমে যাননি। শান্তির পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর জন্য আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ।‘ পিপিপি চেয়ারম্যান কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে পাকিস্তানের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার গুরুত্বের উপর জোর দেন, যা তিনি উল্লেখ করেন যে এই অঞ্চলের সংঘাতের মূল কারণ।

এদিকে ব্রাসেলে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিটির চেয়ারম্যান বার্ন্ড ল্যাঙ্গের সাথে বৈঠকের পর গণমাধ্যমের সাথে কথা বলার সময়, বিলাওয়াল দীর্ঘস্থায়ী এই সংঘাত মোকাবেলায় সংলাপের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

banner close
banner close