শুক্রবার

১৩ জুন, ২০২৫
৩০ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
১৭ , ১৪৪৬

যুদ্ধে হেরে হতাশ ভারত: পাকিস্তান

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২ জুন, ২০২৫ ১১:৩৯

শেয়ার

যুদ্ধে হেরে হতাশ ভারত: পাকিস্তান
ছবি: সংগৃহীত

একটি ব্যর্থ সামরিক অভিযানের পর চরম হতাশা তৈরি হয়েছে ভারতের মধ্যে। আর সেটাই স্পষ্ট হয়ে বের হয়ে এসেছে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরের বক্তব্যে। পাকিস্তানে হামলা চালানোর অধিকার সম্পর্কে মঙ্গলবার জয়শংকরের একটি বক্তব্যের পর এমন প্রতিক্রিয়াই জানিয়েছে ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জয়শংকরের যুদ্ধবাজ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, যুদ্ধে হেরে হতাশ ভারত। আর এ কারণেই তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন উদ্ভট বক্তব্য রাখছেন।

গত মাসে পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে চার দিনের সামরিক সংঘর্ষের পর থেকে দুইদেশর সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। সেই পরিস্থির মধ্যেই এই পাল্টাপাল্টি বক্তব্য এলো।

মঙ্গলবার ব্রাসেলসে দেয়া এক বক্তব্যে জয়শঙ্কর বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন বলেছিলেন , অপারেশন সিন্দুর শেষ হয়নি, তখনই এটি স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সন্ত্রাসীরা আমাদের ক্ষতি করলে আমরাও যে কোনো সময়, যে কোনো জায়গায় তাদের তাড়া করার অধিকার রাখি।’

তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের ভেতরে ঢুকে হামলা চালানোর অধিকার ভারতের আছে।’

পাকিস্তানকে দুধ পাহারা দেয়া বিড়ালের সঙ্গেও তুলনা করেন তিনি।

ভারতের শীর্ষ কূটনীতিকের এসব মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করে এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দিল্লির শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার দিকে লক্ষ্য রাখা উচিত। তার আচরণের সমালোচনা করে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সুর ও বক্তব্য তার পদমর্যাদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বেশ কয়েক বছর ধরে, ভারত একটি কাল্পনিক বর্ণনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করতে বিদ্বেষপূর্ণ প্রচারণায় লিপ্ত । তবে ভারতের অব্যাহত পাকিস্তানবিরোধী সমালোচনা তার সীমান্তের বাইরে সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকতা লুকাতে পারে না, এমনকি ভারতের অবৈধভাবে অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে রাষ্ট্র অনুমোদিত নিপীড়নকেও ঢেকে রাখতে পারে না।

এতে বলা হয়, অন্যদের দিকে আঙুল তোলার পরিবর্তে, ভারতের সন্ত্রাসবাদ, নাশকতা এবং হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়ে আত্মবিশ্লেষণ করা উচিত। পাকিস্তান শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী-এ কথা পুনর্ব্যক্ত করে, অধিকৃত কাশ্মীরে পহেলগাম হামলার প্রেক্ষাপটে ভারতকে তার আগ্রাসী কর্মকাণ্ডের ন্যায্যতা প্রমাণের জন্য বানোয়াট গল্প তৈরি বন্ধ করার আহ্বান পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ভারত হতাশ বলে মন্তব্য করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারতীয় নেতাদের উচিত তাদের বক্তব্যের মান উন্নত করা এবং পাকিস্তানের প্রতি তাদের এই অতি আবেগ ত্যাগ করা। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করে, ইসলামাবাদ শান্তির পথে এগোলেও, গত মাসে দিল্লি যেভাবে হামলা চালিয়েছে সেভাবে হামলা হলে সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যুদ্ধ করবে।

বিবৃতির শেষে বলা হয়, কে সবচেয়ে বেশি চিৎকার করেছে সেটা দেখে নয় ইতিহাস বিচার করবে কে সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান কাজ করেছে তার উপর ভিত্তি করে।

একদিন আগে, জয়শঙ্করের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় পিকিস্তান পিপলস পার্টির সিনেটর শেরি রেহমান ভারতকে ‘নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া যুদ্ধবাজ শক্তি’ বলে অভিহিত করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘ভারতে প্রতিটি হামলার জন্য পাকিস্তান দায়ী হতে পারে না। পাকিস্তানের সাথে সংঘর্ষ থেকে ভারত কোনো শিক্ষা নেয়নি।’

অধিকৃত কাশ্মীরের পহেলগাম হামলার পর থেকে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে তীব্র টানাপোড়েন চলছে। ওই হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। কোনো প্রমাণ ছাড়াই দিল্লি এই হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করে। পাকিস্তান দৃঢ়ভাবে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে নিরপেক্ষ তদন্তের প্রস্তাব দেয়। এরপর ভারত পাকিস্তানে হামলা চালালেও খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দিল্লি ও ইসলামাবাদ।

এই মাসের শুরুতে, পাকিস্তান ভারতের সাথে সাম্প্রতিক সংঘাতের উপর তার দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্বের কাছে উপস্থাপন করার জন্য এবং এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একটি বিস্তৃত ভিত্তিক আলোচনা অভিযান শুরু করে। নয়াদিল্লির অপ্রমাণিত অভিযোগ। বিশ্বব্যাপী প্রচারণার অংশ হিসেবে, রেহমানসহ একটি প্রতিনিধিদল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছে, বর্তমানে লন্ডনে রয়েছে এবং ব্রাসেলসও যাবে।

banner close
banner close