
চলমান উত্তেজনার মধ্যে ভারতের সাথে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের উচ্চপর্যায়ের একটি কূটনৈতক দল এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে ইসলামাবাদের অবস্থান আন্তর্জাতিক অঙ্গণে তুলে ধরার অংশ হিসেবে রোববার লন্ডনে পৌঁছেছে। দলটি ব্রাসেলসও সফর করবে।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারির নেতৃত্বাধীন এ দলে রয়েছেন আরও দুই সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানী খার ও খুররম দস্তগীর। এছাড়াও রয়েছেন সিনেটর শেরি রেহমান, মুসাদিক মালিক, ফয়সাল সাবজওয়ারি, বুশরা আঞ্জুম বাট এবং সিনিয়র দূত জলিল আব্বাস জিলানি এবং তেহমিনা জানজুয়া। এর আগে এই দলটি একই লক্ষ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সফর করে।
লন্ডনে পৌছানোর পর খুররম দস্তগীর জিও নিউজকে বলেন, ‘অস্বস্তির সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করলাম, আমেরিকানরা মনে করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করেছেন, তাই আর হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই। এটিই ছিল আমাদের লক্ষ্য। তাদের বোঝানো যে হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘কূটনৈতিক প্রতিনিধিদল তাদের উদ্দেশ্যে সফল হয়েছে। আমাদের মন্ত্রীরাও এই অবস্থান তুলে ধরেন যে, যদি ভারত আবার আলোচনার টেবিলে না আসে, তাহলে পানি সমস্যা এবং ভারতের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের কারণে উপমহাদেশে যুদ্ধ নিশ্চিত। কারণ তাদের মতে, যুদ্ধের জন্য তাদের প্রমাণের প্রয়োজন নেই।’
একইভাবে, সাবজওয়ারি জিও নিউজকে বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্ব শক্তিগুলি ভারতকে জানাক, এটি শুধু আঞ্চলিক নয় বরং বিশ্বের শান্তির জন্যও ক্ষতিকর।’
প্রতিনিধিদলটি জাতিসংঘের বহুপাক্ষিক ফোরামে কাজ শুরু করেছে উল্লেখ করে সিনেটর জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা সামরিক দক্ষতা দেখানো সত্ত্বেও, আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠার আশায় এখানে এসেছি।’
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রদূত রেহমান বৈঠকগুলিকে অত্যন্ত ইতিবাচক বলে অভিহিত করে বলেন, তারা আমাদের বক্তব্য এবং ঝুঁকিগুলি বুঝতে পেরেছেন। তারা সবাই একমত, পানিকে অস্ত্র বানানো ঠিক না। পিপিপি নেত্রী এই বিষয়ে নয়াদিল্লির বিভিন্ন দেশে পাঠানো প্রতিনিধিদের কথা উল্লেখ করে কৌতুক করে বলেন, ‘ভারতীয়রা যাই করুক না কেনো, তাদের জন্য শুভকামনা।’
সিনেটর বাট অধিকৃত কাশ্মীর এবং সিন্ধু পানি চুক্তি সম্পর্কে পাকিস্তানের উদ্বেগ প্রসঙ্গে নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটনের প্রতিক্রিয়াকে চমৎকার বলে অভিহিত করে বলেন, ‘যদি আজ সিন্ধু পানি চুক্তি উপেক্ষা করা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে কোনো চুক্তিই টিকবে না।’
৪ জুন বিলাওয়ালের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল নিউইয়র্কে তাদের দুই দিনের সফর শেষ করে। সেখানে তারা জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নির্বাচিত এবং স্থায়ী সদস্যদের সাথে দেখা করে। এরপর তারা ওয়াশিংটনে মার্কিন কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন সদস্যের সাথে দেখা করে।
অন্যদিকে কঠিন সময়ে পাকিস্তানকে সমর্থন করার জন্য সৌদি যুবরাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। রোববার সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে দেখা করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, জাতীয় পরিষদ সচিবালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
এদিকে ভারতের সাতটি সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার দেশগুলোতে সফর শুরু করেছে। তারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের সাথেও দেখা করবে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দিল্লির অবস্থান তুলে ধরাই তাদের লক্ষ্য।’
আরও পড়ুন: