ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তান জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সন্ত্রাস দমন কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে। এর মাধ্যমে তারা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস দমন প্রচেষ্টা সম্পর্কিত ১৩৭৩ (২০০১) রেজোলিউশন বাস্তবায়নের তদারকির দায়িত্ব পেল। বুধবার জাতিসংঘে পাকিস্তানের মিশন এক বিবৃতি এসব তথ্য জানায়।
এই নির্বাচনকে পাকিস্তানের জন্য কূটেনৈতিকভাবে বড় বিজয় হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ইসলামাবাদ জাতিসংঘ সনদের নীতি ও উদ্দেশ্য প্রচারে দীর্ঘ দিন থেকেই সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও তারা উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নেয়া শীর্ষ দেশগুলোর একটি তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, পাকিস্তানকে নিরাপত্তা পরিষদের ডকুমেন্টেশন এবং কাজের পদ্ধতি সম্পর্কিত অনানুষ্ঠানিক ওয়ার্কিং গ্রুপ বা আই/ডাব্লিউ/জি এবং নবগঠিত নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কিত আই/ডাব্লিউ/জি-এর সহ-সভাপতি নিযুক্ত করা হয়েছে।
ডকুমেন্টেশন গ্রুপটি কাউন্সিলের পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা, দক্ষতা এবং অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে কাজ করবে। নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কিত আই/ডাব্লিউ/জি জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা ব্যবস্থার কার্যকারিতা এবং পদ্ধতি উন্নত করার উপর গুরুত্ব দেয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই নিয়োগগুলি জাতিসংঘ ব্যবস্থার সাথে পাকিস্তানের সক্রিয় সম্পৃক্ততার প্রতিনিধিত্ব করে। যার মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য হিসেবে গঠনমূলক ভূমিকাও অন্তর্ভুক্ত। এগুলি পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী প্রচেষ্টার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বলে মনে করে ইসলামাবাদ।
এতে আরও বলা হয়েছে, পাকিস্তান জাতিসংঘ সনদের নীতি ও উদ্দেশ্যকে এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সহযোগিতায় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী লড়াইয়ে ভূমিকা পালনে জাতিসংঘ এবং সহযোগী সদস্য রাষ্ট্রগুলির সাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সর্বশেষ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের নির্বাচনে, পাঁচটি নতুন দেশ - বাহরাইন, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, লাটভিয়া, লাইবেরিয়া ও কলম্বিয়া নির্বাচিত হয়েছে। আগামী বছর ১ জানুয়ারি থেকে তারা তাদের দুবছর মেয়াদের দায়িত্বপালন শুরু করবে।
নিরাপত্তা পরিষদই একমাত্র জাতিসংঘ সংস্থা যা নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং বল প্রয়োগের অনুমোদনের মতো আইনত বাধ্যতামূলক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এর পাঁচটি স্থায়ী ভেটো-প্রাপ্ত সদস্য রয়েছে: ব্রিটেন, চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র।
বাকি ১০ সদস্যকে বেছে নেওয়া হয় নির্বাচনের মাধ্যমে। প্রতি বছর পাঁচজন নতুন সদস্য যোগদান করেন। বাহরাইন, কলম্বিয়া, ডিআরসি, লাটভিয়া এবং লাইবেরিয়া - যারা সকলেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিল। এরা আগামী বছর ১ জানুয়ারি থেকে আলজেরিয়া, সিয়েরা লিওন, দক্ষিণ কোরিয়া, গায়ানা এবং স্লোভেনিয়ার স্থলে দায়িত্ব পালন শুরু
বিবৃতি বলা হয়, পাকিস্তান দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সন্ত্রাসি তৎপরতার সবচেয়ে বড় শিকার। এ সময়ে ৮০ হাজারেরও বেশি পাকিস্তানি সন্ত্রাসি হামলায় নিহত এবং হাজার হাজার আহত মানুষ আহত হয়।
পাকিস্তানের অভিযোগ, এ সব সন্ত্রাসি হামলার পেছনে ভারতের ইন্ধন রয়েছে। তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান এবং বেলুচ লিবারেশন আর্মির মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলিকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে হামলা চালানোর জন্য ভারত মদদ দিচ্ছে।
সম্প্রতি ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে পারমানবিক শক্তিধর এই দুই দেশের সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে। ওই হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হয়। এই হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করে দিল্লি।
পাকিস্তান এই অভিযোগ স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে ঘটনার স্বচ্ছ তদন্তের প্রস্তাব দেয়। তবে ভারত পাকিস্তানের এ প্রস্তাবে কান দেয়নি। উল্টো তারা পাকিস্তানের অভিযান চালায়।
আরও পড়ুন:
