ছবি: সংগৃহীত
ভারতের অব্যাহত কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্যেই এবার নড়েচড়ে বসেছে পাকিস্তানও। দুদেশের মধ্যকার চলমান উত্তেজনা নিয়ে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে উদ্যোগি হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর এই মুসলিম রাষ্ট্রটিও। সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে পাকিস্তানের একটি শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল জানিয়েছে, ভারত আঞ্চলিক শান্তির জন্য হুমকি স্বরূপ।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, তিনজন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, দুইজন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত দুই সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সমন্বয়ে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের দলটি গত রবিবার জাতিসংঘে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যার জন্য নিউইয়র্কে পৌঁছায়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, প্রতিনিধিদলটি একই লক্ষ্য নিয়ে ওয়াশিংটন ডিসি, লন্ডন ও ব্রাসেলসও সফর করবে।
পাকিস্তান পিপলস পার্টির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি, হিনা রব্বানী খার এবং খুররম দস্তগীর; সিনেটর শেরি রেহমান, মুসাদিক মালিক, ফয়সাল সাবজওয়ারি ও বুশরা আঞ্জুম ভাট; এবং জলিল আব্বাস জিলানী এবং তাহমিনা জানজুয়া এই প্রতিনিধিদলের সদস্য।
পিপিপি এক্স হ্যান্ডেলে দেয়া এক পোস্টে জানায়, প্রতিনিধিদলটি "ভারতীয় প্রচারণার সত্য উন্মোচনের বিষয়টি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য ডেনমার্ক, গ্রিস, পানামা, সোমালিয়া, আলজেরিয়া, গায়ানা, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিয়েরা লিওন এবং স্লোভেনিয়ার প্রতিনিধিদের কাছে তুলে ধরেন।
এ সময় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল প্রতিনিধিদের বলেন, ‘শহর এলাকাগুলিকে লক্ষ্য করে ভারত হামলা চালায়। পাশাপাশি তারা সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে। যা আঞ্চলিক শান্তির জন্য হুমকি।‘
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, বিলাওয়াল প্রতিনিধিদের সামনে যুক্তি দিয়ে "ভিত্তিহীন ভারতীয় অভিযোগ" প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং বলেছেন ‘কোনও গবেষণা বা প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে দোষারোপ করা অগ্রহণযোগ্য। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংঘাত-পরবর্তী সমাধান প্রচেষ্টার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয় বরং দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তির জন্য সংঘাত-পূর্ব সমাধান খুঁজে বের করা উচিত।‘
তিনি আরো বলেন, ‘ভারতীয় হামলার জবাবে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া ছিল দায়িত্বশীল এবং জাতিসংঘ সনদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।‘ প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদের জানান, ভারত সিন্ধুর পানি চুক্তি স্থগিত করার কারণে পাকিস্তানে পানি ও খাদ্য সংকট এবং পরিবেশগত বিপর্যয় হতে পারে।
এক্স হ্যান্ডেলে দেয়া এক পোস্টে বিলাওয়াল বলেন, তারা ভারতের ক্রমবর্ধমান উস্কানির মুখে পাকিস্তানের নীতিগত এবং দায়িত্বশীল অবস্থানের কথা জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের জানিয়েছেন। পোস্টে তিনি বলেন,
পাকিস্তান দ্ব্যর্থহীনভাবে সকল ধরনের সন্ত্রাসের নিন্দা জানায়। তিনি বলেন, আমরা সংঘাত চাই না, তবে আমাদের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। দক্ষিণ এশিয়া আর কোনও সংকট সহ্য করতে পারে না। (এই টুইট ডনে আছ)
আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং ভারতীয় আগ্রাসন নিয়ে আলোচনা করার জন্য প্রতিনিধিদলটি এর আগে চীনের জাতিসংঘের দূত ফু কং-এর সাথে দেখা করে। বিলাওয়াল ভারতের সাথে উত্তেজনার সময় চীনের সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
চীনা প্রতিনিধিদল ‘পাকিস্তানি নাগরিকদের লক্ষ্য করে ভারতের‘ অভিযানের বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে।
পাকিস্তানের প্রতিনিধি দলটির জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি এবং নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্যের রাষ্ট্রদূতদের সাথে দেখা করার কথা রয়েছে। এটি ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার দূতদের একটি যৌথ অধিবেশনেও যোগ দেবে।
আরও পড়ুন:
