
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরিচালিত অপারেশন সিন্দুরে ন্যাক্কারজনকভাবে পরাজিত হওয়ার পরও ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপি আগামী নির্বাচনের প্রচারে এই যুদ্ধকেই সবচেয়ে বড় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেছে। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই খেলায় সবচেয়ে এগিয়ে।
অমিত শাহ রবিবার পশ্চিমবঙ্গ সফর করেন। সেখানেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বর্ণনা করে তার সরকার ফেলে দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে ওই দিনেই পশ্চিমবঙ্গে সমাবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মমতা বন্দোপাধ্যায়ও। বক্তব্যে তিনি রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলে হিন্দু নারীদের কাছে পবিত্র সিঁদুরকে ব্যবহার না করার আহ্বান জানান।
হিন্দু ধর্মমতে, সিঁদুরকে অত্যন্ত পবিত্র বলে বিবেচনা করা হয়। মূলত বিবাহিত নারীরাই এটি ব্যবহার করেন। স্বামী মারা গেলে তারা আর সিঁদুর ব্যবহার করেন না।
এর আগে, মমতা সাবেক ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ইস্যুতে ভারতের পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো ভারতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত করার অনুমতি দেননি।
মোদির বিরুদ্ধে এ ধরনের মন্তব্যের কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করেন অমিত শাহ। ওই সময় মমতা বলেছিলেন, ওই কূটনৈতিক মিশনে কে যাবেন তা দল বেছে নেবে।
এরপরই মমতার সমালোচনা শুরু করেন অমিত শাহ। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিযোগ, মুসলিম ভোটব্যাংককে সন্তুষ্ট করার জন্য অপারেশন সিন্দুর আর ওয়কফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতা করছেন মমতা।
কলকাতায় দলীয় নেতা ও কর্মীদের উদ্দেশ্যে ভাষণে এই বিজেপি নেতা ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করার স্পষ্ট আহ্বান জানান।
আগামী অক্টোবরে বিহারে লোকসভা নির্বাচন হবে। ওই নির্বাচনের প্রচারেও বিজেপি এই যুদ্ধ এবং ২২ এপ্রিল পেহেলগাম হামলার ইস্যুকে ব্যবহার করছে। পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসীরা ওই হামলা চালায় বলে কোনো প্রমাণ ছাড়াই শুরু থেকে অভিযোগ করে আসছে বিজেপি।
রবিবারের বক্তব্যে অমিত শাহ দাবি করেন, বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে যে দাঙ্গা হয় সেটাও "রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট"।
তিনি বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রী বিএসএফ-কে গালিগালাজ করেছেন, এবং দলের নেতারা সেখানে দাঁড়িয়ে দাঙ্গাবাজদের উৎসাহিত করছেন। যদি বিএসএফ মোতায়েন করা হত, তাহলে হিন্দুরা সুরক্ষিত থাকত। বিজেপি কর্মীরা হাইকোর্টে যাওয়ার পরেই বিএসএফকে অবশেষে সেখানে পাঠানো হয়েছিল।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশীদের জন্য পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত খুলে দিয়েছেন। অনুপ্রবেশ তার আশীর্বাদেই ঘটছে। কেবল বিজেপি সরকারই এটি বন্ধ করতে পারে।
আরও পড়ুন: