শুক্রবার

৩০ মে, ২০২৫
১৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
৪ , ১৪৪৬

উৎক্ষেপণের ৩০ মিনিটেই ভেঙে পড়লো স্টারশিপের রকেট

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৮ মে, ২০২৫ ১২:০৬

আপডেট: ২৮ মে, ২০২৫ ১২:০৭

শেয়ার

উৎক্ষেপণের ৩০ মিনিটেই ভেঙে পড়লো স্টারশিপের রকেট
ছবি: রয়টার্স

ধনকুবের ইলন মাস্কের মহাকাশযান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স-এর অত্যাধুনিক রকেট স্টারশিপ উৎক্ষেপণের ৩০ মিনিট পরই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভেঙে পড়েছে। এটি ছিল স্টারশিপের নবম পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ। রকেটটি টেক্সাস থেকে মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল এবং এতে কোনো মানুষ ছিল না। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রকেটটি মহাকাশে পৌঁছানোর পরই জ্বালানি লিকের কারণে এটি অনিয়ন্ত্রিতভাবে ঘূর্ণায়মান হতে থাকে। ফলে এটি নির্ধারিত সময়ের আগেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে এবং সেখানেই ভেঙে পড়ে।

স্পেসএক্স সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছে, রকেটটি ‘র‌্যাপিড আনশিডিউলড ডিসঅ্যাসেম্বলি’-র শিকার হয়েছে, যার অর্থ এটি হঠাৎ ভেঙে পড়েছে।

তবে প্রতিষ্ঠানটি আশাবাদী। তারা জানিয়েছে, ‘এই ধরনের পরীক্ষায় সাফল্য আসে শেখা থেকে। আজকের এই অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে স্টারশিপকে আরো নির্ভরযোগ্য করে তুলবে। আমাদের লক্ষ্য হলো মানবজাতিকে বহুপ্ল্যানেটারি করে তোলা।’

উল্লেখ্য, রকেটটি ৪০৩ ফুট (১২৩ মিটার) লম্বা এবং এটি পূর্ববর্তী পরীক্ষাগুলোর তুলনায় অনেক বেশি দূর অগ্রসর হয়েছিল, তবে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতায় শেষ হয়।

এটি ছিল স্টারশিপের নবম পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষামূলক ফ্লাইট। এর আগে ৬ মার্চ আরেকটি স্টারশিপ উৎক্ষেপণের পরপরই বিস্ফোরিত হয়।

স্পেসএক্স এখন পর্যন্ত ৮টি পূর্ণাঙ্গ ফ্লাইটের মধ্যে ৪টি সফল এবং ৪টি ব্যর্থ হয়েছে। সংস্থাটি ‘ফেইল ফাস্ট, লার্ন ফাস্ট’ বা ‘দ্রুত ব্যর্থ হয়ে, দ্রুত শিক্ষা নেয়া’ নীতিতে বিশ্বাস করে। তারা মনে করে, এই ব্যর্থতাগুলো থেকেই তারা ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা পাচ্ছে।

স্টারশিপ ও সুপার হেভি বুস্টার মিলিয়ে রকেটের আকার এতটাই বড় যে এর ব্যর্থতার ফলে বিশাল এলাকাজুড়ে ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়ছে।

মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) তখন মায়ামি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ ফ্লোরিডার ৪টি বিমানবন্দরের ফ্লাইট সাময়িকভাবে বন্ধ করে এবং বেশ কয়েকটি ফ্লাইটের রুট পরিবর্তন করে।

ইলন মাস্কের ব্যবসায়িক কার্যক্রম এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে সম্প্রতি বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

মার্চ মাসে একটি নীতিগত সংস্থা ক্যাম্পেইন লিগ্যাল সেন্টার (সিএলসি) অভিযোগ করে যে, স্পেসএক্সের মালিকানাধীন স্টারলিংক স্যাটেলাইট পরিষেবা এবং এফএএ-এর মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্বার্থের সংঘাত তৈরি করতে পারে। এ বিষয়ে তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে।

স্টারশিপ প্রকল্পে এখন পর্যন্ত বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছেন মাস্ক। তার দাবি, এটি মানুষের মঙ্গল গ্রহে বসবাস নিশ্চিত করার পথে বড় একটি পদক্ষেপ।

এ ছাড়াও, স্পেসএক্স মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র সঙ্গে যৌথভাবে একটি প্রকল্পে কাজ করছে, যার লক্ষ্য ৫০ বছরের বেশি সময় পর আবার মানুষকে চাঁদে পাঠানো।

তবে স্পেসএক্সের এই উচ্চাকাঙ্ক্ষী যাত্রায় বারবার ব্যর্থতা বড় এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তারপরও প্রতিষ্ঠানটি বলছে, প্রতিটি ব্যর্থতাই পরবর্তী সফলতার জন্য ভিত্তি তৈরি করছে।

banner close
banner close