বুধবার

৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

সালমান শাহ: কিংবদন্তির স্মরণে কাঁদছে কোটি হৃদয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০৮:৪০

শেয়ার

সালমান শাহ: কিংবদন্তির স্মরণে কাঁদছে কোটি হৃদয়
সালমান শাহ

বাংলাদেশি সিনেমার ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র সালমান শাহ। হঠাৎ বিদায় নিয়েছেন প্রায় তিন দশক আগে, তবু যেন কোথাও যাননি। আজ ৫৪তম জন্মদিনে তাকে ঘিরে আবারো আবেগে ভাসছে লাখো ভক্ত। নামটি উচ্চারিত হলেই চোখ ভিজে ওঠে অনেকের। সময় পেরিয়ে গেছে, প্রজন্ম বদলেছে কিন্তু সালমান শাহ রয়ে গেছেন তারকা নয়, কিংবদন্তি হয়ে।

সালমান শাহর দাদা নানা উভয়েই সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নানা অভিনয় করেছিলেন উপমহাদেশের প্রথম বাংলা চলচ্চিত্রমুখ মুখোশ’-এ। মা নীলা চৌধুরীও ছিলেন অভিনয়শিল্পী। পরিবারের এই সংস্কৃতিক ধারাবাহিকতায় সালমানের গানে অভিনয়ে আগমন ছিল যেন অনিবার্য।

ছোটবেলা থেকেই সংগীতের সঙ্গে সম্পর্ক। বন্ধুমহলে ছিলেন পরিচিত গায়ক, ছায়ানট থেকে পল্লীগীতিতে উত্তীর্ণ হন ১৯৮৬ সালে। অভিনয়ে যাত্রা শুরু হয় নাটক দিয়ে। মঈনুল আহসান সাবেরের লেখা ধারাবাহিকপাথর সময়’- অভিনয় করে দর্শকপ্রিয়তা পান। তবে বড় পর্দায় তার উপস্থিতিই বদলে দেয় বাংলা সিনেমার ধারা।

১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহানের পরিচালনায় মুক্তি পাওয়াকেয়ামত থেকে কেয়ামতছবিতে মৌসুমীর বিপরীতে অভিষেকের পরই সালমান শাহ হয়ে ওঠেন তুমুল জনপ্রিয়। একের পর এক হিট ছবি উপহার দেন। বিশেষ করে শাবনূরের সঙ্গে তার জুটি হয়ে ওঠে অমর, যা আজও বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে সফল জুটিগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত।

জীবদ্দশায় তিনি উপহার দিয়েছেন: ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘সুজন সখী’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘বিচার হবে’, ‘প্রিয়জন’, ‘তোমাকে চাই’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘স্নেহ’, ‘দেনমোহরএবং আরও অনেক জনপ্রিয় চলচ্চিত্র।

মৃত্যুর পর মুক্তিপ্রাপ্তআনন্দ অশ্রু’, ‘বুকের ভিতর আগুন’, ‘প্রেম পিয়াসী’, ‘সত্যের মৃত্যু নেই প্রতিটিই ছিল ভক্তদের জন্য শেষবারের মতো তাকে রুপালি পর্দায় দেখার এক আবেগময় অভিজ্ঞতা।

১৯৯৬ সালের সেপ্টেম্বর হঠাৎ মৃত্যুর সংবাদে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল পুরো জাতি। সেই শূন্যতা আজও পূরণ হয়নি, কোনোদিন হবেও না। কারণ সালমান শাহ শুধু একজন নায়ক ছিলেন না, ছিলেন একটি সময়, একটি আবেগ, প্রেম স্বপ্নের প্রতীক।

বাংলাদেশের সমান বয়সী সালমান শাহ আজও জীবিত কোটি ভক্তের হৃদয়ে। তিনি কেবল অভিনয় দিয়ে নয়, তার স্টাইল, রুচি, উচ্চারণ একেবারে আলাদা উপস্থিতি দিয়ে এক নতুন যুগের সূচনা করেছিলেন। তার মতো করে আর কেউ আসেনি। সম্ভবত আসবেও না।

আজ তার জন্মদিনে, চলচ্চিত্রপাড়া থেকে সাধারণ ভক্ত সবাই মনে করছেন, সালমান শাহ ছিলেন না, তিনি আছেন। থাকবেন আমাদের প্রেম, আবেগ আর না-পাওয়ার এক চিরন্তন হাহাকারে।



banner close
banner close