আসন্ন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনকে সামনে রেখে ছাত্রদল ও ছাত্র অধিকার সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেল ১৩ দফা নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছে। ইশতেহারে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা, আবাসন সংকট নিরসন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ভাষা শহিদ রফিক ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলের ভিপি প্রার্থী একেএম রাকিব আনুষ্ঠানিকভাবে ইশতেহার ঘোষণা করেন। এ সময় প্যানেলের অন্যান্য প্রার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।
ঘোষিত ইশতেহারে প্রথমেই একটি গণতান্ত্রিক ও ভয়মুক্ত ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। ক্যাম্পাসে সহিংসতা রোধ, পর্যাপ্ত সিসিটিভি ও আলোর ব্যবস্থা, ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা সহায়তা, যৌন হয়রানি ও সাইবার বুলিং প্রতিরোধে আইনি সহায়তা সেল গঠন এবং নিয়মিত জকসু নির্বাচন নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করা হয়।
শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আবাসন সংকট সমাধানে বেদখলকৃত জমি ও ভবন উদ্ধার করে হল নির্মাণ, নির্মাণাধীন হল দ্রুত শেষ করা, অস্থায়ী হল ব্যবস্থা চালু, আবাসন ভাতা প্রদান এবং দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত আবাসিক হল নির্মাণের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরা হয়।
ইশতেহারে ক্যাম্পাস অবকাঠামো উন্নয়নের অংশ হিসেবে মূল ক্যাম্পাস সংস্কার, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন, সকল ভবনের নিরাপত্তা পুনঃনিরীক্ষণ, উচ্চগতির ইন্টারনেট, আধুনিক কেন্দ্রীয় ও ডিজিটাল লাইব্রেরি, টিএসসি উন্নয়ন এবং ধর্মীয় উপাসনালয় স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়নে বাসের সংখ্যা ও রুট বাড়ানো, ডাবল শিফট চালু, যানবাহনের ফিটনেস নিশ্চিতকরণ, লাইভ লোকেশনভিত্তিক অ্যাপ, বাসে ওয়াই-ফাই ও ফার্স্ট এইড সুবিধা চালুর কথাও উল্লেখ করা হয়।
খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবায় ন্যায্যমূল্যে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, রাতের খাবার ব্যবস্থা, মেডিকেল সেন্টার আধুনিকায়ন, বিনামূল্যে জরুরি ওষুধ, সার্বক্ষণিক চিকিৎসক ও অ্যাম্বুলেন্স, স্বাস্থ্যবীমা এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপনের অঙ্গীকার করা হয়েছে।
শিক্ষা ও গবেষণা খাতে অনলাইন স্টুডেন্ট পোর্টাল, প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল, সেশনজট নিরসন, গবেষণা বরাদ্দ বৃদ্ধি, আধুনিক ল্যাব ও গবেষণা সহায়ক সফটওয়্যার সহজলভ্য করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়ক ব্যবস্থার কথাও ইশতেহারে রয়েছে।
এছাড়া ভর্তি, ফি প্রদান, সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্টসহ প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম ডিজিটাল ও হয়রানিমুক্ত করার পাশাপাশি ডিজিটাল সার্ভিস ডেস্ক চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়।
কর্মসংস্থান ও ক্যারিয়ার উন্নয়নে অন-ক্যাম্পাস জব, খণ্ডকালীন কাজ, ইন্টার্নশিপ, জব ফেয়ার, জব প্লেসমেন্ট নেটওয়ার্ক, এলামনাই নেটওয়ার্ক এবং স্টার্টআপ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম জোরদারে নিয়মিত আন্তঃবিভাগ প্রতিযোগিতা, আধুনিক জিমনেশিয়াম, ইনডোর গেমস, মাঠ উন্নয়ন এবং জাতীয়-আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের সহায়তার অঙ্গীকার করা হয়।
নারী শিক্ষার্থীদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে ডে-কেয়ার সুবিধা, স্যানিটারি প্যাড ভেন্ডিং মেশিন, নারী চিকিৎসক, নিরাপদ ক্যাম্পাস এবং নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এদিকে, ছাত্রদল-ছাত্র অধিকার সমর্থিত প্যানেলকে সমর্থন জানিয়ে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন প্রার্থী মো. রাকিব হাসান, চন্দন কুমার দাশ ও মাসরূহ আহমেদ। তারা ভিপি পদে একেএম রাকিবকে সমর্থন দেন।
আরও পড়ুন:








